ঢাকা ১১:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

আগামীতে প্রত্যেকেরই খেতাব কেড়ে নেয়ার সুযোগ তৈরি হতে পারে

জনপ্রিয় অনলাইন
  • আপডেট সময় : ০৯:০৮:১৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১ ৭৪৮ বার পড়া হয়েছে

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলের সংকীর্ণ মানসিকতা থেকে সরকারকে সরে আসার আহবান জানিয়েছে চারটি সংগঠন। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহবান জানান হয়।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী একসাথে পালনের ঘোষণা দিতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সংগঠনগুলো। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, ছাত্র-যুব ও শ্রমিক অধিকার পরিষদের সমন্বয়ক ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর এবং রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম। গণসংহতি আন্দোলনের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেলের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্র অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান, যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান, ভাসানী অনুসারী পরিষদের প্রেসিডিয়াম মেম্বার মুক্তিযোদ্ধা আকতার হোসেন ও অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, জিয়াউর রহমান শুধু মুক্তিযোদ্ধাই নন, তিনি সেক্টর কমান্ডার ছিলেন। তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। স্বাধীনতার পর রাষ্ট্রই তাকে এ খেতাব দিয়েছিল। ৫০ বছর পর তার পরবর্তী রাজনৈতিক ভুমিকার কথা বলে `বীর উত্তম’ খেতাব বাতিল করলে তা আগামীতে আওয়ামীলীগ নেতাসহ প্রত্যেকেরই খেতাব কেড়ে নেয়ার সুযোগ তৈরি করতে পারে। এজন্য এ ধরনের সংকীর্ণ মানসিকতা থেকে সরকারকে সরে আসার আহবান জানাচ্ছি।

সংগঠনগুলোর গৃহিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- ১ মার্চ জাতীয় প্রেস ক্লাবে মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা, ১২ মার্চ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সুবর্ণজয়ন্তী সমাবেশ, ২৬ মার্চ স্ব-স্ব সংগঠনের উদ্যোগে স্বাধীনতা দিবস পালন এবং ১০ এপ্রিল স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র দিবস পালন। এছাড়াও দেশব্যাপী বছরজুড়ে বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়া হবে বলে জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জোনায়েদ সাকি বলেন, রাষ্ট্র যাকে স্বীকৃতি দিয়েছে, তার পরবর্তী রাজনৈতিক ভুমিকার কথা বলে খেতাব কেড়ে নেয়া এর চেয়ে আর ভয়াবহ কিছু হতে পারে না। এটি বাস্তবায়িত হলে পরবর্তীতে প্রত্যেকেরই খেতাব কেড়ে নেয়ার সুযোগ তৈরি হবে। আওয়ামী লীগ পরবর্তীতে ক্ষমতায় না থাকলে তাদের নেতাদেরও খেতাব কেড়ে নেয়া হতে পারে। তিনি বলেন, রাষ্ট্রে বিভাজন তৈরি করতেই দেশি-বিদেশী ষড়যন্ত্রে এটা করা হচ্ছে। এটা আমরা কখনো সমর্থন করতে পারি না।

শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ জিয়াউর রহমান দেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। পরদিন তিনি বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এখন জামুকা তার খেতাব বাতিল করতে চায়। জামুকার কাছে আমার প্রশ্ন তাদের এ অধিকার কে দিয়েছে? যিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন তাকে বিতর্কিত করতে চাচ্ছেন ? এটা করলে আপনারই বিতর্কিত হয়ে যাবেন। আপনারা জামুকাকে বিতর্কিত করবেন না।

নুরুল হক নুর বলেন, জিয়াউর রহমান শুধু মুক্তিযোদ্ধাই নন, তিনি সেক্টর কমান্ডার ছিলেন। বীর উত্তম এমন একটি খেতাব যা যাকে তাকে দেয়া হয়নি। তার খেতাব বাতিলের এখতিয়ার জামুকার নেই। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের খেতাব নিয়ে টানাটানি একটি নোংরামি ছাড়া কিছুই নয়। মানুষ এ ঘটনায় সরকারের প্রতি ধিক্কার জানাচ্ছে। নুর আরো বলেন, যারা তার খেতাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাদের মুক্তিযোদ্ধা সনদ নিয়েই প্রশ্ন রয়েছে। এখন প্রতিবছর মুক্তিযোদ্ধার তালিকা নতুন করে করা হয়। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও এখনো নির্ভুল মুক্তিযোদ্ধার তালিকা হয়নি। এটা জাতির জন্য লজ্জার। ঢাবির সাবেক এ ভিপি বলেন, আল জাজিরা সরকারের মুখোস খুলে দিয়েছে। এ কারণেই তারা ঘটনা ভিন্ন দিকে নিতে খেতাব বিতর্ক শুরু করেছে। এ ধরনের সংকীর্ণ মানসিকতার জন্য আমরা ধিক্কার জানাই।

হাসনাত কাইয়ূম বলেন, ২০১৯ সালে এ রাষ্ট্র চিহ্নিত অপরাধীদের গোপনে সাধারণ ক্ষমা করেছে, সেটা আমরা আজকের পত্রিকায় জানতে পেরেছি। রাষ্ট্রে আমাদের মালিকানা না থাকায় এসব নিয়ে প্রশ্ন করাতো দূরে থাক, জানার অধিকারও আমাদের নেই। রাষ্ট্রের তত্ত্বাবধানে, প্রশ্রয়ে অনুষ্ঠিত সকল অন্যায়, অপরাধ, লুটপাট, পাচার বন্ধ করতে না পারলে আমাদের কোনো ভবিষ্যত নেই। আর এজন্য প্রয়োজন রাষ্ট্রের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।

লিখিত বক্তব্যে ভাসানী অনুসারী পরিষদের প্রেসিডিয়াম মেম্বার ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক মহাসচিব নইম জাহাঙ্গীর বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও জনগনের ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়া হচ্ছে। শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের নির্বাচনী পথকে রুদ্ধ করে দিয়ে হত্যা-ক্যু-ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত-সহিংসতাকে রাজনীতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। ফলে রাষ্ট্রে মাফিয়াতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের দেশ পরিচালনার কোনও নৈতিক অধিকার নেই। নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালট বাক্স পূরণ করে ভোটের নামে নজিরবিহীন প্রহসন করা হয়েছে। আমরা সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগের আহ্বান জানাই। সব রাজনৈতিক দল ও জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে সক্ষম একটি অর্ন্তবতী সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

আগামীতে প্রত্যেকেরই খেতাব কেড়ে নেয়ার সুযোগ তৈরি হতে পারে

আপডেট সময় : ০৯:০৮:১৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২১

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলের সংকীর্ণ মানসিকতা থেকে সরকারকে সরে আসার আহবান জানিয়েছে চারটি সংগঠন। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহবান জানান হয়।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী একসাথে পালনের ঘোষণা দিতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সংগঠনগুলো। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, ছাত্র-যুব ও শ্রমিক অধিকার পরিষদের সমন্বয়ক ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর এবং রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম। গণসংহতি আন্দোলনের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেলের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন ছাত্র অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান, যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান, ভাসানী অনুসারী পরিষদের প্রেসিডিয়াম মেম্বার মুক্তিযোদ্ধা আকতার হোসেন ও অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, জিয়াউর রহমান শুধু মুক্তিযোদ্ধাই নন, তিনি সেক্টর কমান্ডার ছিলেন। তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। স্বাধীনতার পর রাষ্ট্রই তাকে এ খেতাব দিয়েছিল। ৫০ বছর পর তার পরবর্তী রাজনৈতিক ভুমিকার কথা বলে `বীর উত্তম’ খেতাব বাতিল করলে তা আগামীতে আওয়ামীলীগ নেতাসহ প্রত্যেকেরই খেতাব কেড়ে নেয়ার সুযোগ তৈরি করতে পারে। এজন্য এ ধরনের সংকীর্ণ মানসিকতা থেকে সরকারকে সরে আসার আহবান জানাচ্ছি।

সংগঠনগুলোর গৃহিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- ১ মার্চ জাতীয় প্রেস ক্লাবে মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা, ১২ মার্চ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সুবর্ণজয়ন্তী সমাবেশ, ২৬ মার্চ স্ব-স্ব সংগঠনের উদ্যোগে স্বাধীনতা দিবস পালন এবং ১০ এপ্রিল স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র দিবস পালন। এছাড়াও দেশব্যাপী বছরজুড়ে বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়া হবে বলে জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জোনায়েদ সাকি বলেন, রাষ্ট্র যাকে স্বীকৃতি দিয়েছে, তার পরবর্তী রাজনৈতিক ভুমিকার কথা বলে খেতাব কেড়ে নেয়া এর চেয়ে আর ভয়াবহ কিছু হতে পারে না। এটি বাস্তবায়িত হলে পরবর্তীতে প্রত্যেকেরই খেতাব কেড়ে নেয়ার সুযোগ তৈরি হবে। আওয়ামী লীগ পরবর্তীতে ক্ষমতায় না থাকলে তাদের নেতাদেরও খেতাব কেড়ে নেয়া হতে পারে। তিনি বলেন, রাষ্ট্রে বিভাজন তৈরি করতেই দেশি-বিদেশী ষড়যন্ত্রে এটা করা হচ্ছে। এটা আমরা কখনো সমর্থন করতে পারি না।

শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ জিয়াউর রহমান দেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। পরদিন তিনি বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এখন জামুকা তার খেতাব বাতিল করতে চায়। জামুকার কাছে আমার প্রশ্ন তাদের এ অধিকার কে দিয়েছে? যিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন তাকে বিতর্কিত করতে চাচ্ছেন ? এটা করলে আপনারই বিতর্কিত হয়ে যাবেন। আপনারা জামুকাকে বিতর্কিত করবেন না।

নুরুল হক নুর বলেন, জিয়াউর রহমান শুধু মুক্তিযোদ্ধাই নন, তিনি সেক্টর কমান্ডার ছিলেন। বীর উত্তম এমন একটি খেতাব যা যাকে তাকে দেয়া হয়নি। তার খেতাব বাতিলের এখতিয়ার জামুকার নেই। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের খেতাব নিয়ে টানাটানি একটি নোংরামি ছাড়া কিছুই নয়। মানুষ এ ঘটনায় সরকারের প্রতি ধিক্কার জানাচ্ছে। নুর আরো বলেন, যারা তার খেতাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাদের মুক্তিযোদ্ধা সনদ নিয়েই প্রশ্ন রয়েছে। এখন প্রতিবছর মুক্তিযোদ্ধার তালিকা নতুন করে করা হয়। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও এখনো নির্ভুল মুক্তিযোদ্ধার তালিকা হয়নি। এটা জাতির জন্য লজ্জার। ঢাবির সাবেক এ ভিপি বলেন, আল জাজিরা সরকারের মুখোস খুলে দিয়েছে। এ কারণেই তারা ঘটনা ভিন্ন দিকে নিতে খেতাব বিতর্ক শুরু করেছে। এ ধরনের সংকীর্ণ মানসিকতার জন্য আমরা ধিক্কার জানাই।

হাসনাত কাইয়ূম বলেন, ২০১৯ সালে এ রাষ্ট্র চিহ্নিত অপরাধীদের গোপনে সাধারণ ক্ষমা করেছে, সেটা আমরা আজকের পত্রিকায় জানতে পেরেছি। রাষ্ট্রে আমাদের মালিকানা না থাকায় এসব নিয়ে প্রশ্ন করাতো দূরে থাক, জানার অধিকারও আমাদের নেই। রাষ্ট্রের তত্ত্বাবধানে, প্রশ্রয়ে অনুষ্ঠিত সকল অন্যায়, অপরাধ, লুটপাট, পাচার বন্ধ করতে না পারলে আমাদের কোনো ভবিষ্যত নেই। আর এজন্য প্রয়োজন রাষ্ট্রের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।

লিখিত বক্তব্যে ভাসানী অনুসারী পরিষদের প্রেসিডিয়াম মেম্বার ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক মহাসচিব নইম জাহাঙ্গীর বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও জনগনের ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়া হচ্ছে। শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের নির্বাচনী পথকে রুদ্ধ করে দিয়ে হত্যা-ক্যু-ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত-সহিংসতাকে রাজনীতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। ফলে রাষ্ট্রে মাফিয়াতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের দেশ পরিচালনার কোনও নৈতিক অধিকার নেই। নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালট বাক্স পূরণ করে ভোটের নামে নজিরবিহীন প্রহসন করা হয়েছে। আমরা সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগের আহ্বান জানাই। সব রাজনৈতিক দল ও জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে সক্ষম একটি অর্ন্তবতী সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।