ঢাকা ০৯:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

ড: ইউনূস হঠাৎ কেন আলোচনায় ?

জনপ্রিয় অনলাইন
  • আপডেট সময় : ০৭:৪১:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৩ ৩৬২ বার পড়া হয়েছে

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সরগরম দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন। এর মধ্যেই আজ রোববার নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার চিঠিসহ কয়েকটি বিষয় এসেছে আলোচনায়। কিন্তু হঠাৎ করেই কেন তিনি আলোচনায় সেই প্রশ্ন সামনে এসেছে।

রোববার ইউনূস সেন্টার জানায়, গত ১৭ আগস্ট ড. ইউনূসকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন ওবামা। চিঠিটি কেন দশ দিন পর প্রকাশ করা হয়েছে, সে বিষয়ে অবশ্য কিছু জানায়নি তারা।

চিঠিতে ওবামা লিখেছেন, ‘প্রিয় প্রফেসর ইউনূস, মানুষের পরিবার এবং সমাজকে দারিদ্র্যমুক্ত করে তাদের ক্ষমতায়নের জন্য আপনার প্রচেষ্টা আমাকে দীর্ঘকাল অনুপ্রাণিত করছে। ২০০৯ সালে হোয়াইট হাউসে আপনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সুযোগ পেয়ে আমি বলেছিলাম, আপনার কর্মকাণ্ড লাখ লাখ মানুষকে তাদের নিজস্ব সম্ভাবনার কথা ভাবতে অনুপ্রাণিত করেছে।’

চিঠিতে তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমি আশা করি এটা আপনাকে শক্তি জোগাবে যে, যাদের অনেকের সম্ভাবনাকে আপনি বিনিয়োগ করেছেন এবং আমরা যারা সবার জন্য অর্থনৈতিক ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করছি, আপনি তাদের ভাবনায় রয়েছেন। আমি আশা আপনার গুরুত্বপূর্ণ কাজ করার স্বাধীনতা অব্যাহত থাকবে।’

এদিকে, ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে সরকারের ফৌজদারি মামলা দায়ের এবং সরকারি বিভিন্ন সংস্থার দ্বারা হয়রানির প্রতিবাদ জানিয়েছেন ৩৪ নাগরিক। আজ এক বিবৃতিতে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘সম্প্রতি প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমে তার কয়েকজন সহকর্মীর বিরুদ্ধে শ্রম আইন ভঙ্গের অভিযোগে শ্রম আদালতে একটি ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তার আইনজীবীরা জানিয়েছেন, উত্থাপিত অভিযোগগুলো দেওয়ানি চরিত্রের হলেও সরকারের পক্ষ থেকে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়। এই মামলা অস্বাভাবিক দ্রুতগতিতে নিষ্পত্তি করার ক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা বর্তমানে লক্ষণীয় হয়ে উঠছে।’

তারা আরও বলেন, ‘ব্যাংক হিসাব তলব, তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদের নামে ড. ইউনূসকে সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান হয়রানি করেছে। পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে তার বিরুদ্ধে নানা ধরনের বিষোদগার অব্যাহত রয়েছে। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে শ্রম আদালতে তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়েরের ঘটনাটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে ধারণা করার যুক্তি রয়েছে বলে আমরা মনে করছি। আমরা এতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।’

বিবৃতিদাতারা বলেন, ‘ড. ইউনূস অতিদরিদ্র ও অবহেলিত মানুষের অবস্থার উন্নয়নে কাজ করে বিশ্বে সম্মানিত ব্যক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম ও কংগ্রেশনাল গোল্ড মেডেলসহ বিভিন্ন পদক ও পুরস্কার অর্জন করে বাংলাদেশের জন্য বিরল সম্মান বয়ে এনেছেন। আইনগত ও প্রশাসনিক পদক্ষেপের মোড়কে তাকে হয়রানি করা হচ্ছে এবং বিশ্বের কাছে নেতিবাচক বার্তা দেওয়া হচ্ছে।’

২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গ্রামীণ অর্থনীতিতে অবদান রাখায় তাকে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। এরপর ২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম’ পেয়েছিলেন গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. ইউনূস।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ড: ইউনূস হঠাৎ কেন আলোচনায় ?

আপডেট সময় : ০৭:৪১:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৩

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সরগরম দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন। এর মধ্যেই আজ রোববার নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার চিঠিসহ কয়েকটি বিষয় এসেছে আলোচনায়। কিন্তু হঠাৎ করেই কেন তিনি আলোচনায় সেই প্রশ্ন সামনে এসেছে।

রোববার ইউনূস সেন্টার জানায়, গত ১৭ আগস্ট ড. ইউনূসকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন ওবামা। চিঠিটি কেন দশ দিন পর প্রকাশ করা হয়েছে, সে বিষয়ে অবশ্য কিছু জানায়নি তারা।

চিঠিতে ওবামা লিখেছেন, ‘প্রিয় প্রফেসর ইউনূস, মানুষের পরিবার এবং সমাজকে দারিদ্র্যমুক্ত করে তাদের ক্ষমতায়নের জন্য আপনার প্রচেষ্টা আমাকে দীর্ঘকাল অনুপ্রাণিত করছে। ২০০৯ সালে হোয়াইট হাউসে আপনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সুযোগ পেয়ে আমি বলেছিলাম, আপনার কর্মকাণ্ড লাখ লাখ মানুষকে তাদের নিজস্ব সম্ভাবনার কথা ভাবতে অনুপ্রাণিত করেছে।’

চিঠিতে তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমি আশা করি এটা আপনাকে শক্তি জোগাবে যে, যাদের অনেকের সম্ভাবনাকে আপনি বিনিয়োগ করেছেন এবং আমরা যারা সবার জন্য অর্থনৈতিক ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করছি, আপনি তাদের ভাবনায় রয়েছেন। আমি আশা আপনার গুরুত্বপূর্ণ কাজ করার স্বাধীনতা অব্যাহত থাকবে।’

এদিকে, ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে সরকারের ফৌজদারি মামলা দায়ের এবং সরকারি বিভিন্ন সংস্থার দ্বারা হয়রানির প্রতিবাদ জানিয়েছেন ৩৪ নাগরিক। আজ এক বিবৃতিতে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘সম্প্রতি প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমে তার কয়েকজন সহকর্মীর বিরুদ্ধে শ্রম আইন ভঙ্গের অভিযোগে শ্রম আদালতে একটি ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তার আইনজীবীরা জানিয়েছেন, উত্থাপিত অভিযোগগুলো দেওয়ানি চরিত্রের হলেও সরকারের পক্ষ থেকে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়। এই মামলা অস্বাভাবিক দ্রুতগতিতে নিষ্পত্তি করার ক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা বর্তমানে লক্ষণীয় হয়ে উঠছে।’

তারা আরও বলেন, ‘ব্যাংক হিসাব তলব, তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদের নামে ড. ইউনূসকে সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান হয়রানি করেছে। পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে তার বিরুদ্ধে নানা ধরনের বিষোদগার অব্যাহত রয়েছে। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে শ্রম আদালতে তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়েরের ঘটনাটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে ধারণা করার যুক্তি রয়েছে বলে আমরা মনে করছি। আমরা এতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।’

বিবৃতিদাতারা বলেন, ‘ড. ইউনূস অতিদরিদ্র ও অবহেলিত মানুষের অবস্থার উন্নয়নে কাজ করে বিশ্বে সম্মানিত ব্যক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম ও কংগ্রেশনাল গোল্ড মেডেলসহ বিভিন্ন পদক ও পুরস্কার অর্জন করে বাংলাদেশের জন্য বিরল সম্মান বয়ে এনেছেন। আইনগত ও প্রশাসনিক পদক্ষেপের মোড়কে তাকে হয়রানি করা হচ্ছে এবং বিশ্বের কাছে নেতিবাচক বার্তা দেওয়া হচ্ছে।’

২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গ্রামীণ অর্থনীতিতে অবদান রাখায় তাকে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। এরপর ২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম’ পেয়েছিলেন গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. ইউনূস।