ঢাকা ১২:৫৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

করোনার মধ্যে রোজা পালন নিরাপদ, প্রতিরোধে সহায়ক : গবেষণা

জনপ্রিয় অনলাইন
  • আপডেট সময় : ০৬:৪৫:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ এপ্রিল ২০২১ ৬৫৯ বার পড়া হয়েছে

রমজানের রোজা করোনা প্রতিরোধে সহায়ক বলে দাবি করা হয়েছে এক গবেষণা প্রতিবেদনে। কারণ হিসেবে তারা বলছে রমজানে মুসলিমরা বেশ কিছু নিময়কানুন মেনে চলেন। যার প্রেক্ষিতে করোনা  সংক্রমণ রোধে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। নিয়মিত নামাজ আদায়ের মাধ্যমে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা, হালাল খাবার পরিবেশন ও অতিরিক্ত খাবার থেকে বিরত থাকার কারণে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় তাদের শরিরে।

গত বছরের রমজানের সময় যুক্তরাজ্যে রমজানের উপবাসের ফলে মুসলিমদের মধ্যে করোনা ভাইরাসে মৃত্যুর হার বৃদ্ধি পায়নি বলে নতুন এক গবেষণা প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বৈশ্বিক স্বাস্থ্যবিষয়ক পিয়ার-রিভিউড সাময়িকী গ্লোবাল হেলথে এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, গত বছর পবিত্র রমজান পালনকারী ব্রিটেনের মুসলিমদের করোনাভাইরাস সংক্রমণে বেশি মৃত্যু হয়েছে; এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

প্রত্যেক বছর বিশ্বের কোটি কোটি মুসলিম পবিত্র রমজান মাস পালন করেন। এ সময় ইসলামের বিধান অনুযায়ী— তারা সেহরি থেকে ইফতারের পূর্ব পর্যন্ত কোনো ধরনের খাবার এবং পানীয় গ্রহণ থেকে বিরত থাকেন। যুক্তরাজ্যে ৩০ লাখের বেশি মুসলিম বসবাস করেন; যা দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় পাঁচ শতাংশ এবং তাদের বেশিরভাগই দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত।

যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাস মহামারির প্রথম ঢেউ আঘাত হানার পরপরই গত বছরের ২৩ এপ্রিল দেশটিতে রমজান মাস শুরু হয়। সেই সময় দেশজুড়ে লকডাউন জারির কারণে রমজানের স্বাভাবিক উদযাপন এবং মসজিদে নামাজ আদায় স্থগিত করে ব্রিটেনের সরকার।

ইংল্যান্ডের এক ডজনের বেশি স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সংগৃহীত করোনায় মৃত্যুর ডাটা বিশ্লেষণ করে ওই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। এসব এলাকায় মুসলিম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা প্রায় ২০ শতাংশ। গত বছরের রমজানের সময় করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের মৃত্যুর তুলনামূলক বিশ্লেষণে এসব তথ্য মিলেছে বলে গবেষণায় দাবি করা হয়েছে।

গবেষকরা দেখেছেন, ইংল্যান্ডের এই এলাকাগুলোতে রমজান শুরু হওয়ার পর করোনায় মৃত্যুর হার ধারাবাহিকভাবে কমে যায়। এছাড়া মৃত্যুর হার কমে যাওয়ার এই গতি পুরো রমজান মাসজুড়ে অব্যাহত থাকে। গবেষকরা বলেছেন, মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে রমজান মাস পালনের কারণে করোনার ক্ষতিকর কোনো প্রভাব দেখা যায়নি।

কারণ দেশটির অনেক বিশ্লেষক ও রাজনীতিবিদ গত বছর কিছু কিছু এলাকায় করোনা ভাইরাসের উল্লম্ফনের জন্য নির্দিষ্ট কিছু সম্প্রদায়— বিশেষ করে মুসলিমদের দায়ী করেছিলেন।

ব্রিটেনের মুসলিমদের বৃহত্তম সংগঠন দ্য মুসলিম কাউন্সিল অব ব্রিটেন (এমসিবি) বলছে, এই গবেষণা প্রতিবেদন রাজনীতিবিদ এবং বিশ্লেষকদের নেতিবাচক ধারণা বাতিল করে দিয়েছে। যুক্তরাজ্যে আগামী ১৩ এপ্রিল থেকে রমজান শুরু হবে; যার দুই সপ্তাহ আগে এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হলো। সূত্র: আলজাজিরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

করোনার মধ্যে রোজা পালন নিরাপদ, প্রতিরোধে সহায়ক : গবেষণা

আপডেট সময় : ০৬:৪৫:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ এপ্রিল ২০২১

রমজানের রোজা করোনা প্রতিরোধে সহায়ক বলে দাবি করা হয়েছে এক গবেষণা প্রতিবেদনে। কারণ হিসেবে তারা বলছে রমজানে মুসলিমরা বেশ কিছু নিময়কানুন মেনে চলেন। যার প্রেক্ষিতে করোনা  সংক্রমণ রোধে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। নিয়মিত নামাজ আদায়ের মাধ্যমে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা, হালাল খাবার পরিবেশন ও অতিরিক্ত খাবার থেকে বিরত থাকার কারণে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় তাদের শরিরে।

গত বছরের রমজানের সময় যুক্তরাজ্যে রমজানের উপবাসের ফলে মুসলিমদের মধ্যে করোনা ভাইরাসে মৃত্যুর হার বৃদ্ধি পায়নি বলে নতুন এক গবেষণা প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বৈশ্বিক স্বাস্থ্যবিষয়ক পিয়ার-রিভিউড সাময়িকী গ্লোবাল হেলথে এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, গত বছর পবিত্র রমজান পালনকারী ব্রিটেনের মুসলিমদের করোনাভাইরাস সংক্রমণে বেশি মৃত্যু হয়েছে; এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

প্রত্যেক বছর বিশ্বের কোটি কোটি মুসলিম পবিত্র রমজান মাস পালন করেন। এ সময় ইসলামের বিধান অনুযায়ী— তারা সেহরি থেকে ইফতারের পূর্ব পর্যন্ত কোনো ধরনের খাবার এবং পানীয় গ্রহণ থেকে বিরত থাকেন। যুক্তরাজ্যে ৩০ লাখের বেশি মুসলিম বসবাস করেন; যা দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় পাঁচ শতাংশ এবং তাদের বেশিরভাগই দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত।

যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাস মহামারির প্রথম ঢেউ আঘাত হানার পরপরই গত বছরের ২৩ এপ্রিল দেশটিতে রমজান মাস শুরু হয়। সেই সময় দেশজুড়ে লকডাউন জারির কারণে রমজানের স্বাভাবিক উদযাপন এবং মসজিদে নামাজ আদায় স্থগিত করে ব্রিটেনের সরকার।

ইংল্যান্ডের এক ডজনের বেশি স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সংগৃহীত করোনায় মৃত্যুর ডাটা বিশ্লেষণ করে ওই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। এসব এলাকায় মুসলিম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা প্রায় ২০ শতাংশ। গত বছরের রমজানের সময় করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের মৃত্যুর তুলনামূলক বিশ্লেষণে এসব তথ্য মিলেছে বলে গবেষণায় দাবি করা হয়েছে।

গবেষকরা দেখেছেন, ইংল্যান্ডের এই এলাকাগুলোতে রমজান শুরু হওয়ার পর করোনায় মৃত্যুর হার ধারাবাহিকভাবে কমে যায়। এছাড়া মৃত্যুর হার কমে যাওয়ার এই গতি পুরো রমজান মাসজুড়ে অব্যাহত থাকে। গবেষকরা বলেছেন, মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে রমজান মাস পালনের কারণে করোনার ক্ষতিকর কোনো প্রভাব দেখা যায়নি।

কারণ দেশটির অনেক বিশ্লেষক ও রাজনীতিবিদ গত বছর কিছু কিছু এলাকায় করোনা ভাইরাসের উল্লম্ফনের জন্য নির্দিষ্ট কিছু সম্প্রদায়— বিশেষ করে মুসলিমদের দায়ী করেছিলেন।

ব্রিটেনের মুসলিমদের বৃহত্তম সংগঠন দ্য মুসলিম কাউন্সিল অব ব্রিটেন (এমসিবি) বলছে, এই গবেষণা প্রতিবেদন রাজনীতিবিদ এবং বিশ্লেষকদের নেতিবাচক ধারণা বাতিল করে দিয়েছে। যুক্তরাজ্যে আগামী ১৩ এপ্রিল থেকে রমজান শুরু হবে; যার দুই সপ্তাহ আগে এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হলো। সূত্র: আলজাজিরা।