ঢাকা ০১:২২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্যপদ কী কারণে পেল না, জানাল যুক্তরাষ্ট্র

জনপ্রিয় অনলাইন
  • আপডেট সময় : ০৭:৪৩:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ জুলাই ২০২৩ ৩৬৭ বার পড়া হয়েছে

লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলিনাসে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সামরিক জোট নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশনের (ন্যাটো) সদ্য শেষ হওয়া সম্মেলনে কী কারণে ইউক্রেনকে জোটের সদস্যপদ দেওয়া হয়নি— তা ব্যাখা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

মঙ্গলবার সম্মেলন শেষ হওয়ার পর ভিলিনাসে এক সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান। এ সময় সাংবাদিকদের এ বিষয়ক এক প্রশ্নের উত্তরে সুলিভান বলেন, ‘ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যকার যুদ্ধের সমাপ্তি কীভাবে ঘটতে পারে, সে সম্পর্কিত কোনো আলোচনা আজ আমরা করতে চাই না; কিন্তু মাঝে মাঝে আমাদের সামনে এমন কিছু সময় এসে উপস্থিত হয়— যখন কোনো সমস্যা বা প্রশ্নকে প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গির বাইরে গিয়ে ভিন্নভাবে দেখতে হয়।’

‘ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্যপদ দেওয়া হয়নি। কারণ এখন যদি (ইউক্রেনকে) সদস্যপদ দেওয়া হয়, তাহলে যে যুদ্ধটি চলছে— সেটি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরিবর্তে রাশিয়া-ন্যাটো যুদ্ধে রূপ নেবে এবং ধ্বংসের ব্যপ্তি বাড়বে আরও বহুগুণ; আর রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে জড়ানোর কোনো পরিকল্পনা ন্যাটোর নেই।’

উপস্থিত মুহূর্তে আমরা এটুকু বলতে পারি— ইউক্রেন যদি তার শাসনব্যবস্থায় প্রয়োজনীয় সংস্কার আনতে সক্ষম হয়, সেক্ষেত্রে একদিন দেশটি ন্যাটোর সদস্যপদ পাবে; কিন্তু কবে নাগাদ তা ঘটবে— সে সম্পর্কিত কোনো সময়সীমা আমরা দিতে পারছি না।’

পৃথক এক সংবাদ সম্মেলনে ন্যাটোর মহাসচিব জিনস স্টলটেনবার্গ বলেছেন, ইউক্রেন কীভাবে জোটের সদস্যপদ পেতে পারে— সে সম্পর্কিত কোনো রোডম্যাপও এই মুহূর্তে কিয়েভ দিতে প্রস্তুত নয় ন্যাটো।

এর আগে গত সপ্তাহে সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছিলেন, ইউক্রেন এখনও জোটের সদস্যপদ পাওয়ার উপযুক্ততা অর্জন করেনি।

২০১৪ সালে রাশিয়ার কাছে ক্রিমিয়ার দখল হারানোর পর থেকেই ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে ইউক্রেন। গত ৯ বছরে অন্তত ৩ বার এই জোটের সদস্যপদের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে লিখিত আবেদন জমা দিয়েছে দেশটি।

কিয়েভের প্রত্যাশা ছিল—ভিলিনাসে সম্মেলনেই ইউক্রেনকে জোটের পূর্ণসদস্যপদ দেওয়া হবে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর ইউরোপীয় প্রভাবশালী সদস্যদের অনাগ্রহের কারণে সেই প্রত্যাশা আর পূরণ হয়নি।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ভিলিনাস সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। জোটের সদস্যপদ কিংবা এ সংক্রান্ত কোনো স্পষ্ট দিকনির্দেশনা না পাওয়ায় হতাশ জেলেনস্কি সম্মেলনে প্রকাশ্যে মন্তব্য করে বসেন— তার দেশকে সদস্যপদ না দেওয়ার এই সিদ্ধান্ত ‘অযৌক্তিক’ এবং এটি ন্যাটোর ‘দুর্বলতার’ প্রমাণ।

তবে তার এই মন্তব্য ন্যাটোর নেতাদের নজর এড়ায় নি। জোটের এক প্রভাবশালী সদস্যরাষ্ট্রের জেষ্ঠ্য কূটনীতিক জেলেনস্কির কূটনীতিক জেলেনস্কির কঠোর সমালোচনা করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম পলিটিকোকে বলেন, ‘জেলেনস্কি অতিরিক্ত কথা বলেন। ভিলিনাসে তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা বিবেচনাপূর্ণ ও সংযত ছিল বলে আমি মনে করি না।’

ভিলিনাস সম্মেলনে উপস্থিত অপর এক ইউরোপীয় কূটনীতিক জেলেনস্কির প্রতি বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা ইউক্রেনকে স্পষ্ট সংকেত দিয়েছি এবং জেলেনস্কিকে বুঝতে হবে, (ইউক্রেন প্রসঙ্গে) আমরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি— সেটিই চুড়ান্ত।’

জেলেনস্কি অবশ্য পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে এক পোস্টে জানিয়েছেন, ন্যাটোর সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন তিনি।

 

সূত্র : আরটি নিউজ

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্যপদ কী কারণে পেল না, জানাল যুক্তরাষ্ট্র

আপডেট সময় : ০৭:৪৩:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ জুলাই ২০২৩

লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলিনাসে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সামরিক জোট নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশনের (ন্যাটো) সদ্য শেষ হওয়া সম্মেলনে কী কারণে ইউক্রেনকে জোটের সদস্যপদ দেওয়া হয়নি— তা ব্যাখা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

মঙ্গলবার সম্মেলন শেষ হওয়ার পর ভিলিনাসে এক সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান। এ সময় সাংবাদিকদের এ বিষয়ক এক প্রশ্নের উত্তরে সুলিভান বলেন, ‘ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যকার যুদ্ধের সমাপ্তি কীভাবে ঘটতে পারে, সে সম্পর্কিত কোনো আলোচনা আজ আমরা করতে চাই না; কিন্তু মাঝে মাঝে আমাদের সামনে এমন কিছু সময় এসে উপস্থিত হয়— যখন কোনো সমস্যা বা প্রশ্নকে প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গির বাইরে গিয়ে ভিন্নভাবে দেখতে হয়।’

‘ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্যপদ দেওয়া হয়নি। কারণ এখন যদি (ইউক্রেনকে) সদস্যপদ দেওয়া হয়, তাহলে যে যুদ্ধটি চলছে— সেটি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরিবর্তে রাশিয়া-ন্যাটো যুদ্ধে রূপ নেবে এবং ধ্বংসের ব্যপ্তি বাড়বে আরও বহুগুণ; আর রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে জড়ানোর কোনো পরিকল্পনা ন্যাটোর নেই।’

উপস্থিত মুহূর্তে আমরা এটুকু বলতে পারি— ইউক্রেন যদি তার শাসনব্যবস্থায় প্রয়োজনীয় সংস্কার আনতে সক্ষম হয়, সেক্ষেত্রে একদিন দেশটি ন্যাটোর সদস্যপদ পাবে; কিন্তু কবে নাগাদ তা ঘটবে— সে সম্পর্কিত কোনো সময়সীমা আমরা দিতে পারছি না।’

পৃথক এক সংবাদ সম্মেলনে ন্যাটোর মহাসচিব জিনস স্টলটেনবার্গ বলেছেন, ইউক্রেন কীভাবে জোটের সদস্যপদ পেতে পারে— সে সম্পর্কিত কোনো রোডম্যাপও এই মুহূর্তে কিয়েভ দিতে প্রস্তুত নয় ন্যাটো।

এর আগে গত সপ্তাহে সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছিলেন, ইউক্রেন এখনও জোটের সদস্যপদ পাওয়ার উপযুক্ততা অর্জন করেনি।

২০১৪ সালে রাশিয়ার কাছে ক্রিমিয়ার দখল হারানোর পর থেকেই ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে ইউক্রেন। গত ৯ বছরে অন্তত ৩ বার এই জোটের সদস্যপদের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে লিখিত আবেদন জমা দিয়েছে দেশটি।

কিয়েভের প্রত্যাশা ছিল—ভিলিনাসে সম্মেলনেই ইউক্রেনকে জোটের পূর্ণসদস্যপদ দেওয়া হবে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর ইউরোপীয় প্রভাবশালী সদস্যদের অনাগ্রহের কারণে সেই প্রত্যাশা আর পূরণ হয়নি।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ভিলিনাস সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। জোটের সদস্যপদ কিংবা এ সংক্রান্ত কোনো স্পষ্ট দিকনির্দেশনা না পাওয়ায় হতাশ জেলেনস্কি সম্মেলনে প্রকাশ্যে মন্তব্য করে বসেন— তার দেশকে সদস্যপদ না দেওয়ার এই সিদ্ধান্ত ‘অযৌক্তিক’ এবং এটি ন্যাটোর ‘দুর্বলতার’ প্রমাণ।

তবে তার এই মন্তব্য ন্যাটোর নেতাদের নজর এড়ায় নি। জোটের এক প্রভাবশালী সদস্যরাষ্ট্রের জেষ্ঠ্য কূটনীতিক জেলেনস্কির কূটনীতিক জেলেনস্কির কঠোর সমালোচনা করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম পলিটিকোকে বলেন, ‘জেলেনস্কি অতিরিক্ত কথা বলেন। ভিলিনাসে তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা বিবেচনাপূর্ণ ও সংযত ছিল বলে আমি মনে করি না।’

ভিলিনাস সম্মেলনে উপস্থিত অপর এক ইউরোপীয় কূটনীতিক জেলেনস্কির প্রতি বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা ইউক্রেনকে স্পষ্ট সংকেত দিয়েছি এবং জেলেনস্কিকে বুঝতে হবে, (ইউক্রেন প্রসঙ্গে) আমরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি— সেটিই চুড়ান্ত।’

জেলেনস্কি অবশ্য পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে এক পোস্টে জানিয়েছেন, ন্যাটোর সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন তিনি।

 

সূত্র : আরটি নিউজ