পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং সিনিয়র পিটিআই নেতা শাহ মেহমুদ কোরেশিকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট (আইএইচসি)। গত সপ্তাহে দেশটির পুলিশ তাকে আটক করেছিল। বৃহস্পতিবার (১৮ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসলামাবাদ হাইকোর্ট (আইএইচসি) সিনিয়র পিটিআই নেতা শাহ মাহমুদ কোরেশির মুক্তির আদেশ জারি করেছে। গত ৯ মে আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় পার্টির চেয়ারম্যান ইমরান খানের গ্রেপ্তারের পরে ‘হিংসাত্মক বিক্ষোভে উসকানি দেওয়ার’ অভিযোগে কোরেশিসহ বেশ কয়েকজন পিটিআই নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
দ্য ডন বলছে, পিটিআই নেতা শাহ মেহমুদ কোরেশির জামিনের আবেদন বৃহস্পতিবার ইসলামাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি মিয়াঙ্গুল হাসান আওরঙ্গজেবের সামনে পেশ করা হয়। আদালত এসময় জানতে চান কোরেশির বিরুদ্ধে কোনও নথিভুক্ত মামলা আছে কিনা। জবাবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জানান, এটা তাকে খোঁজ নিতে হবে।
আর এরপরই বিচারপতি উভয় পক্ষের যুক্তি-তর্ক শেষ হওয়ার পরই পিটিআই নেতার মুক্তির আদেশ জারি করেন। এছাড়া সাবেক এই পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে যে কারণ দেখিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তাকেও বাতিল এবং অকার্যকর ঘোষণা করেন বিচারক।
উল্লেখ্য, দুর্নীতির মামলায় গত সপ্তাহে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে নাটকীয়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয় ইমরান খানকে। তার সেই গ্রেপ্তার পারমাণবিক অস্ত্রধারী এই দেশে মারাত্মক অস্থিরতা সৃষ্টি করে এবং এরই একপর্যায়ে বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট ইমরানের গ্রেপ্তারকে অবৈধ এবং বেআইনি বলে রায় দেয়।
মূলত গত সপ্তাহে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের বাইরে থেকে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করা হয়। আল-কাদির ট্রাস্ট মামলায় ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরোর (এনএবি) ওয়ারেন্টে পাকিস্তানের আধাসামরিক বাহিনী রেঞ্জার্স তাকে গ্রেপ্তার করে।
পাকিস্তানের দুর্নীতি বিরোধী সংস্থার এই পদক্ষেপে দেশজুড়ে সেদিনই সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শেহবাজ শরিফের সরকার খাইবার পাখতুনখাওয়া, পাঞ্জাব, বেলুচিস্তান এবং ইসলামাবাদসহ দেশের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সেনাবাহিনীকে ডাকতে বাধ্য হয়।
সংবাদমাধ্যম বলছে, আধাসামরিক বাহিনী রেঞ্জার্স ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের ফলে পাকিস্তানে যে অস্থিরতা শুরু হয় তা শুক্রবার পর্যন্ত অব্যাহত ছিল এবং বিক্ষোভকারীদের বেশ কয়েকজনের মৃত্যু এবং কয়েক ডজন সামরিক ও রাষ্ট্রীয় স্থাপনা ধ্বংস হয়ে যায়।
এছাড়া বিক্ষোভ ব্যাপক আকার ধারণ করায় পাকিস্তানের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গণগ্রেপ্তার শুরু করে। আর সেই পরিস্থিতিতে অন্য অনেক শীর্ষ নেতার পাশাপাশি সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশিকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।