ঢাকা ০১:১৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

স্পেন-জার্মানি বিদ্যুৎ-সংকট মেটাতে পাইপলাইন চায়, ফ্রান্সের বাধা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:৩৭:৫৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ অক্টোবর ২০২২ ৩২২ বার পড়া হয়েছে

জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ এখন স্পেনে রয়েছেন। বিদ্যুৎ-সংকট মেটাতে পাইপলাইন প্রকল্প নিয়ে তিনি কথা বলেছেন স্পেনের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। কিন্তু এই প্রকল্পের পথে মূল বাধা ফ্রান্স।

জার্মানির চ্যান্সেলর শলৎজ এবং স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পোড্রো সানচেজ পাইপলাইন নিয়ে একমত, কিন্তু ফ্রান্স এখনও রাজি নয়। মূলত ইউরোপের বিদ্যুৎ-সংকট মেটাতে এই পাইপলাইন খুবই জরুরি বলে মনে করেন জার্মানি ও স্পেনের শীর্ষ এই দুই নেতা।

আসলে এই প্রস্তাবিত পাইপলাইন যাবে পিরানিজ পর্বতমালার পাশ দিয়ে। স্পেন থেকে ফ্রান্স হয়ে তা জার্মানিতে ঢুকবে। শলৎজ ও সানচেজের মধ্যে আলোচনায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে এই পাইপলাইন প্রকল্প। দুই নেতাই এই পাইপলাইন তৈরির পক্ষে।

জয়েন্ট অ্যাকশন প্ল্যানে বলা হয়েছে, হাইড্রো-কার্বন রেডি গ্যাস পাইপলাইন তৈরি খুবই জরুরি। ইইউয়ের মধ্যে একটা এনার্জি মার্কেট তৈরি করতে গেলে এই পাইপলাইন দরকার। পিরানিজের পাশ দিয়ে যাওয়া এই পাইপলাইন ২০২৫ সালের মধ্যে তৈরি হয়ে যাবে। এর ফলে ইইউয়ের কৌশলগত সার্বভৌমত্ব রক্ষিত হবে এবং গ্রিন এনার্জি পাওয়া যাবে।

পাইপলাইন নিয়ে কেন বিতর্ক?

জার্মানি এই পাইপলাইন তৈরির বিষয়ে খুবই আগ্রহী। জার্মানি এতদিন সবচেয়ে বেশি গ্য়াস পেত রাশিয়ার কাছ থেকে। কিন্তু রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার পর থেকে পরিস্থিতি বদলে গেছে। রাশিয়ার গ্যাসের ওপর আর নির্ভর করতে পারছে না জার্মানি।

এই অবস্থায় মাদ্রিদ ও বার্লিন চায়, এই পাইপলাইন তৈরি করা হোক। কিন্তু এই পাইপলাইন যাওয়ার কথা ফ্রান্সের মধ্যে দিয়ে।

সানচেজ বলেছেন, পাইপলাইনের অভাবে স্পেন প্রাকৃতিক গ্যাসের পুরো ব্যবহার করতে পারছে না। ইউরোপের বাকি দেশগুলোকেও বিদ্যুৎ দিতে পারছে না।

অন্যদিকে এই পাইপলাইন নিয়ে ফ্রান্সের সরকার খুব একটা আগ্রহী নয়। এই প্রকল্প ২০১৩ সালে হাতে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ২০১৯ সালে তা বাতিল করা হয়। পরিবেশবিদদের আশঙ্কা এবং আর্থিক দিক থেকে লাভজনক না হওয়া; এই দুই কারণে তা বাতিল করা হয়।

গতমাসে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ এই পাইপলাইন প্রকল্প নিয়ে তার বিরোধের কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, পিরানিজ দিয়ে দুইটি পাইপলাইন গেছে। সেগুলোরই পুরোপুরি ব্যবহার করা হচ্ছে না। এই অবস্থায় তৃতীয় পাইপলাইনের প্রয়োজন নেই।

কিন্তু স্পেনের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর জার্মান চ্যান্সেলর শলৎজ বলেছেন, তিনি মনে করেন ফ্রান্স এই পাইপলাইন প্রকল্প  বাতিল করেনি। কিছু প্রকল্প আজ লাভজনক নাও লাগতে পারে, কিন্তু কাল তা লাভজনক হতে পারে বলে তিনি জানিয়েছেন।

জার্মানি ও স্পেন এই পাইপলাইন আরও প্রসারিত করতে চায়। এর ফলে ইউরোপের অনেক দেশই উপকৃত হতে পারে। শলৎজ জানিয়েছেন, জার্মানি নিজের এলএনজি টার্মিনাল বানাচ্ছে। এই পরিকাঠামো পরে হাইড্রোজেনের জন্যও ব্যবহার করা যাবে।

এছাড়া জার্মানি ও স্পেন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকেও জোরদার করতে চায়। গত জুন মাসে ন্যাটো চুক্তি অনুসারে তারা এই কাজ করতে চায়। যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেছে, ইউরোপে এখন শান্তি নেই। দুই দেশই এখন ইউক্রেনের পাশে বলে আবারও জানানো হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

স্পেন-জার্মানি বিদ্যুৎ-সংকট মেটাতে পাইপলাইন চায়, ফ্রান্সের বাধা

আপডেট সময় : ১১:৩৭:৫৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ অক্টোবর ২০২২

জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ এখন স্পেনে রয়েছেন। বিদ্যুৎ-সংকট মেটাতে পাইপলাইন প্রকল্প নিয়ে তিনি কথা বলেছেন স্পেনের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। কিন্তু এই প্রকল্পের পথে মূল বাধা ফ্রান্স।

জার্মানির চ্যান্সেলর শলৎজ এবং স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পোড্রো সানচেজ পাইপলাইন নিয়ে একমত, কিন্তু ফ্রান্স এখনও রাজি নয়। মূলত ইউরোপের বিদ্যুৎ-সংকট মেটাতে এই পাইপলাইন খুবই জরুরি বলে মনে করেন জার্মানি ও স্পেনের শীর্ষ এই দুই নেতা।

আসলে এই প্রস্তাবিত পাইপলাইন যাবে পিরানিজ পর্বতমালার পাশ দিয়ে। স্পেন থেকে ফ্রান্স হয়ে তা জার্মানিতে ঢুকবে। শলৎজ ও সানচেজের মধ্যে আলোচনায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে এই পাইপলাইন প্রকল্প। দুই নেতাই এই পাইপলাইন তৈরির পক্ষে।

জয়েন্ট অ্যাকশন প্ল্যানে বলা হয়েছে, হাইড্রো-কার্বন রেডি গ্যাস পাইপলাইন তৈরি খুবই জরুরি। ইইউয়ের মধ্যে একটা এনার্জি মার্কেট তৈরি করতে গেলে এই পাইপলাইন দরকার। পিরানিজের পাশ দিয়ে যাওয়া এই পাইপলাইন ২০২৫ সালের মধ্যে তৈরি হয়ে যাবে। এর ফলে ইইউয়ের কৌশলগত সার্বভৌমত্ব রক্ষিত হবে এবং গ্রিন এনার্জি পাওয়া যাবে।

পাইপলাইন নিয়ে কেন বিতর্ক?

জার্মানি এই পাইপলাইন তৈরির বিষয়ে খুবই আগ্রহী। জার্মানি এতদিন সবচেয়ে বেশি গ্য়াস পেত রাশিয়ার কাছ থেকে। কিন্তু রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার পর থেকে পরিস্থিতি বদলে গেছে। রাশিয়ার গ্যাসের ওপর আর নির্ভর করতে পারছে না জার্মানি।

এই অবস্থায় মাদ্রিদ ও বার্লিন চায়, এই পাইপলাইন তৈরি করা হোক। কিন্তু এই পাইপলাইন যাওয়ার কথা ফ্রান্সের মধ্যে দিয়ে।

সানচেজ বলেছেন, পাইপলাইনের অভাবে স্পেন প্রাকৃতিক গ্যাসের পুরো ব্যবহার করতে পারছে না। ইউরোপের বাকি দেশগুলোকেও বিদ্যুৎ দিতে পারছে না।

অন্যদিকে এই পাইপলাইন নিয়ে ফ্রান্সের সরকার খুব একটা আগ্রহী নয়। এই প্রকল্প ২০১৩ সালে হাতে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ২০১৯ সালে তা বাতিল করা হয়। পরিবেশবিদদের আশঙ্কা এবং আর্থিক দিক থেকে লাভজনক না হওয়া; এই দুই কারণে তা বাতিল করা হয়।

গতমাসে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ এই পাইপলাইন প্রকল্প নিয়ে তার বিরোধের কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, পিরানিজ দিয়ে দুইটি পাইপলাইন গেছে। সেগুলোরই পুরোপুরি ব্যবহার করা হচ্ছে না। এই অবস্থায় তৃতীয় পাইপলাইনের প্রয়োজন নেই।

কিন্তু স্পেনের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর জার্মান চ্যান্সেলর শলৎজ বলেছেন, তিনি মনে করেন ফ্রান্স এই পাইপলাইন প্রকল্প  বাতিল করেনি। কিছু প্রকল্প আজ লাভজনক নাও লাগতে পারে, কিন্তু কাল তা লাভজনক হতে পারে বলে তিনি জানিয়েছেন।

জার্মানি ও স্পেন এই পাইপলাইন আরও প্রসারিত করতে চায়। এর ফলে ইউরোপের অনেক দেশই উপকৃত হতে পারে। শলৎজ জানিয়েছেন, জার্মানি নিজের এলএনজি টার্মিনাল বানাচ্ছে। এই পরিকাঠামো পরে হাইড্রোজেনের জন্যও ব্যবহার করা যাবে।

এছাড়া জার্মানি ও স্পেন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকেও জোরদার করতে চায়। গত জুন মাসে ন্যাটো চুক্তি অনুসারে তারা এই কাজ করতে চায়। যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেছে, ইউরোপে এখন শান্তি নেই। দুই দেশই এখন ইউক্রেনের পাশে বলে আবারও জানানো হয়েছে।