ঢাকা ০২:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

মুসলিম দেশগুলোতে ভারতীয় পণ্য বর্জনের আহ্বান জোরদার হচ্ছে

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০১:১৫:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ জুন ২০২২ ২৬৩ বার পড়া হয়েছে

মহানবী (সা) সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করায় মুসলিম বিশ্বের সরকারি ও বেসরকারি মহলের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দার ঝড়ের মুখে হাঁপিয়ে উঠেছে দিল্লির কেন্দ্রীয় সরকার।

সরকার ওই দুই মুখপাত্রকে তাদের পদ থেকে সাময়িকভাবে সরিয়ে দেয়ার ঘোষণা দিলেও তা বিক্ষুব্ধ জনমতকে তেমন একটা শান্ত করতে পারেনি।

অন্তত ৫টি আরব দেশ ভারত সরকারের কাছে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে আনুষ্ঠানিকভাবে। এ ছাড়াও কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে ইরান, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান এবং ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা বা ওআইসি ও মিশরের আলআজহার বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিবাদের জোয়ার দেখা গেছে সোশাল মিডিয়ায় এবং মুসলিম দেশগুলোতে ভারতীয় পণ্য বর্জনের আহ্বান জোরদার হচ্ছে। ভারতের ভেতরেও নানা অঞ্চলে বিজেপি’র বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ হয়েছে।

২০১৪ সালে ভারতে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশটিতে ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষী তৎপরতা ক্রমেই জোরদার করেছে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা। সরকারের অনেক উচ্চ পদে ও সংসদে তাদের উপস্থিতি থাকায় এবং প্রধানমন্ত্রী মোদির নীরবতার সুযোগে এই উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা নানা অজুহাতে ক্রমেই তাদের আগ্রাসী তৎপরতা জোরদারের দুঃসাহস দেখানোর সুযোগ পাচ্ছে।

মুসলমানদের খাদ্য গরুর গোশত, তাদের পোশাক বা হিজাব নিয়ে হয়রানি, অমুসলিম নারীদের সঙ্গে মুসলিম যুবকদের বিয়ে ইত্যাদি নানা অজুহাতে মুসলমানদের ওপর চড়াও হচ্ছে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা এবং মাঝে মধ্যেই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে তারা। মুসলমানদের নানা মসজিদকে বাবরি মসজিদ স্টাইলে ধ্বংস করার ও সেসবকে মন্দিরে রূপান্তর করার এবং মাইকে আযান দেয়ার প্রথা বন্ধ করার হুমকি দিচ্ছে তারা। ভারতের নানা শহর ও অঞ্চলের মুসলিম নামগুলোও বদলে দেয়ার পাঁয়তারা করছে তারা। এ ছাড়াও প্রকাশ্যে মুসলমানদের ওপর গণহত্যা চালানোর হুমকি দেয়া হচ্ছে!

মুসলিম অধ্যুষিত স্বাধীনতাকামী অঞ্চল হওয়ায় ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসনের মর্যাদা বাতিল ও ভারতে মুসলিম অভিবাসীদের নাগরিকত্ব না দেয়ার নীতি এবং স্থানীয় মুসলমানদের বিদেশী বলে ঘোষণা দিয়ে দেশ থেকে বিতাড়নের হুমকি- এসবই ভারতের এক অন্ধকারাচ্ছন্ন ভবিষ্যতের অশনি সংকেত দিচ্ছে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন!

ভারতের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনার কথা থাকলেও সেখানে মুসলমানদের ধর্মীয় স্বাধীনতা, জান-মাল ও সম্মান আজ বিপন্ন বলে অনেকেই মনে করছেন! অথচ দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ১৫ শতাংশ মুসলমান এবং প্রায় ত্রিশ কোটি মুসলমানের দেশ হিসেবে জনসংখ্যার দিক থেকে ভারত বিশ্বের সর্ববৃহৎ বা দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম জনবহুল দেশ। দেশটির বিপুল সংখ্যক শ্রমিক মধ্যপ্রাচ্যে কাজ করেন ও জ্বালানীর দিক থেকেও ভারত মধ্যপ্রাচ্যের জ্বালানী তেলের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল।

ভারত সরকারের উচিত সাম্প্রদায়িক উস্কানি সৃষ্টির যে কোনো প্রচেষ্টাকে কঠোর হাতে দমন করা এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সব ধরনের প্রচেষ্টা চালানো। বিশেষ করে ভারত সরকার বিশ্বের ২০০ কোটিরও বেশি মুসলমানের দৃষ্টিতে সর্বোচ্চ পবিত্রতম ব্যক্তিত্ব এবং বিশ্বশান্তি, সাম্য ও ভ্রাতৃত্বের মহত্তম আদর্শ হিসেবে বিবেচিত বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা)’র প্রতি অবমাননা করার মত নিন্দনীয় কাজ করার কোনো সুযোগ ভারতের কাউকে না দেয়ার লক্ষ্যে কার্যকরী পদক্ষেপ নেবে এটাই আজ মুসলিম বিশ্বের একান্ত প্রত্যাশা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

মুসলিম দেশগুলোতে ভারতীয় পণ্য বর্জনের আহ্বান জোরদার হচ্ছে

আপডেট সময় : ০১:১৫:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ জুন ২০২২

সরকার ওই দুই মুখপাত্রকে তাদের পদ থেকে সাময়িকভাবে সরিয়ে দেয়ার ঘোষণা দিলেও তা বিক্ষুব্ধ জনমতকে তেমন একটা শান্ত করতে পারেনি।

অন্তত ৫টি আরব দেশ ভারত সরকারের কাছে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে আনুষ্ঠানিকভাবে। এ ছাড়াও কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে ইরান, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান এবং ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা বা ওআইসি ও মিশরের আলআজহার বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিবাদের জোয়ার দেখা গেছে সোশাল মিডিয়ায় এবং মুসলিম দেশগুলোতে ভারতীয় পণ্য বর্জনের আহ্বান জোরদার হচ্ছে। ভারতের ভেতরেও নানা অঞ্চলে বিজেপি’র বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ হয়েছে।

২০১৪ সালে ভারতে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশটিতে ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষী তৎপরতা ক্রমেই জোরদার করেছে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা। সরকারের অনেক উচ্চ পদে ও সংসদে তাদের উপস্থিতি থাকায় এবং প্রধানমন্ত্রী মোদির নীরবতার সুযোগে এই উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা নানা অজুহাতে ক্রমেই তাদের আগ্রাসী তৎপরতা জোরদারের দুঃসাহস দেখানোর সুযোগ পাচ্ছে।

মুসলমানদের খাদ্য গরুর গোশত, তাদের পোশাক বা হিজাব নিয়ে হয়রানি, অমুসলিম নারীদের সঙ্গে মুসলিম যুবকদের বিয়ে ইত্যাদি নানা অজুহাতে মুসলমানদের ওপর চড়াও হচ্ছে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা এবং মাঝে মধ্যেই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে তারা। মুসলমানদের নানা মসজিদকে বাবরি মসজিদ স্টাইলে ধ্বংস করার ও সেসবকে মন্দিরে রূপান্তর করার এবং মাইকে আযান দেয়ার প্রথা বন্ধ করার হুমকি দিচ্ছে তারা। ভারতের নানা শহর ও অঞ্চলের মুসলিম নামগুলোও বদলে দেয়ার পাঁয়তারা করছে তারা। এ ছাড়াও প্রকাশ্যে মুসলমানদের ওপর গণহত্যা চালানোর হুমকি দেয়া হচ্ছে!

মুসলিম অধ্যুষিত স্বাধীনতাকামী অঞ্চল হওয়ায় ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসনের মর্যাদা বাতিল ও ভারতে মুসলিম অভিবাসীদের নাগরিকত্ব না দেয়ার নীতি এবং স্থানীয় মুসলমানদের বিদেশী বলে ঘোষণা দিয়ে দেশ থেকে বিতাড়নের হুমকি- এসবই ভারতের এক অন্ধকারাচ্ছন্ন ভবিষ্যতের অশনি সংকেত দিচ্ছে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন!

ভারতের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনার কথা থাকলেও সেখানে মুসলমানদের ধর্মীয় স্বাধীনতা, জান-মাল ও সম্মান আজ বিপন্ন বলে অনেকেই মনে করছেন! অথচ দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ১৫ শতাংশ মুসলমান এবং প্রায় ত্রিশ কোটি মুসলমানের দেশ হিসেবে জনসংখ্যার দিক থেকে ভারত বিশ্বের সর্ববৃহৎ বা দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম জনবহুল দেশ। দেশটির বিপুল সংখ্যক শ্রমিক মধ্যপ্রাচ্যে কাজ করেন ও জ্বালানীর দিক থেকেও ভারত মধ্যপ্রাচ্যের জ্বালানী তেলের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল।

ভারত সরকারের উচিত সাম্প্রদায়িক উস্কানি সৃষ্টির যে কোনো প্রচেষ্টাকে কঠোর হাতে দমন করা এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সব ধরনের প্রচেষ্টা চালানো। বিশেষ করে ভারত সরকার বিশ্বের ২০০ কোটিরও বেশি মুসলমানের দৃষ্টিতে সর্বোচ্চ পবিত্রতম ব্যক্তিত্ব এবং বিশ্বশান্তি, সাম্য ও ভ্রাতৃত্বের মহত্তম আদর্শ হিসেবে বিবেচিত বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা)’র প্রতি অবমাননা করার মত নিন্দনীয় কাজ করার কোনো সুযোগ ভারতের কাউকে না দেয়ার লক্ষ্যে কার্যকরী পদক্ষেপ নেবে এটাই আজ মুসলিম বিশ্বের একান্ত প্রত্যাশা।