ঢাকা ০২:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

মাদ্রিদে দারুল কিরাত মজিদিয়া ফুলতলি ট্রাস্ট এর পুরস্কার বিতরণী সম্পন্ন

সিদ্দিকুর রাহমান, মাদ্রিদ
  • আপডেট সময় : ০৬:৫৪:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ ৪৯৬ বার পড়া হয়েছে

দারুল কিরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাস্ট শাহজালাল লতিফিয়া বাংলাদেশ জামে মসজিদ মাদ্রিদ শাখার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৯ সেপ্টেম্বর রবিবার দুপুর ১২ টায় স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদের শাহজালাল লতিফিয়া বাংলাদেশ মসজিদে এ অনুষ্ঠান  সম্পন্ন হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মাওলানা খলিলুর রাহমান ও অনুষ্ঠানটি পরিচালনা  করেন মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আজমল হোসেন। এতে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ এসোসিয়েশন ইন স্পেনের সভাপতি কাজী এনায়েতুল করিম তারেক, সাবেক সভাপতি আল মামুন,বর্তমান সিনিয়র সহ সভাপতি আল আমিন মিয়া, সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান সুন্দর, গ্রেটার সিলেটের সাবেক আহবায়ক কাইয়ুম আহমদ মাসুক, এসোসিয়েশন ভালিয়েন্তে বাংলার সভাপতি ফজলে এলাহি, সাধারণ সম্পাদক রমিজ উদ্দিন,প্রবিন কমিউনিটি নেতা ফয়জুর রহমান (বড় ভাই),হাবীব আলী, জকিগঞ্জ প্রবাসী কল্যাণ পরিষদের সভাপতি আসাদুজ্জামান সাদ,নারায়ণগঞ্জ জেলা এসোসিয়েশন ইন স্পেনের সভাপতি একরামুজ্জামান কিরন,ঢাকা জেলা এসোসিয়েশন ইন স্পেনের সাধারণ সম্পাদক এইচ এম মাসুদুর রহমান,ব্যাবসায়ী সাইফুল ইসলাম ইকবাল, জাহাঙ্গীর আলম , বদরুল কামালীসহ অনুষ্ঠানে দারুল কিরাতের শিক্ষকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হাফিজ আবুল কাশেম,হাফিজ উসমান, হাফিজ সাইদুল ইসলাম, মাওলানা আব্দুল হামিদ,মাওলানা আতিকুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন কাওসার হোসেন টিপু,শহীদুর রহমান, সাজ্জাদ হোসেন, নুর আহমদ প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে জমাতে ছুরা (ক)  (খ) থেকে জমাতে আওয়াল পর্যন্ত প্রতিটি শ্রেণিতে প্রথম তিন স্থান অধিকারীদের পুরস্কার দেওয়া হয়। মোট ৩ টি শ্রেণিতে ৩৬ জন শিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করা হয়। একই সঙ্গে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সব শিক্ষার্থীকে  পুরস্কার প্রদান করা হয়। প্রতি বছরের মতো এবারও প্রতিটি শ্রেণিতে কিরাত প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের এবং সকল শিক্ষার্থীদের সাধারণ পুরস্কার দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়।

এবারের আয়োজনে ৪ জন ক্বারি সাহেবদের তত্ত্বাবধানে প্রায় ৫০/৬০ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। অনুষ্ঠানে শাহজালাল লতিফিয়া বাংলাদেশ জামে মসজিদের সভাপতি  মাওলানা খলিলুর রহমান সহ বিভিন্ন বক্তাদের বক্তব্যে দারুল কিরাত মজিদিয়া ফুলতলি ট্রাস্টের অতীত ইতিহাস ফুটে ওঠে। বক্তারা তাদের বক্তব্যে বলেন, দারুল ক্বিরাত.মানে বিশুদ্ধ কোরআন শরীফ শিক্ষার প্রতিষ্ঠান।যে প্রতিষ্ঠানে পবিত্র কোরআন শরীফ বিশুদ্ধভাবে পাঠ করার নিয়ম পদ্ধতি জানা যায় সেই প্রতিষ্ঠানকে দারুল ক্বিরাত বলা হয়।

মহাগ্রন্থ আল কোরআন মজিদের একটি ব্যতিক্রমধর্মী বৈশিষ্ট হল এর অনন্য পঠনরীতি। আল্লাহ পাক তাঁর কালামকে তারতীলের অর্থাৎ তাজবীদের সাথে পাঠ করার নির্দেশ দিয়েছেন। মহান আল্লাহ পাকের নির্দেশ অনুযায়ী তাজবীদসহ কোরআন শরীফ পাঠের ধারাবাহিকতা বিশ্বনবী মুহাম্মাদুর.রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সময় হতে চলে আসছে। এরই লক্ষে উলামায়ে কিরামগন কোরআন শরীফ শিক্ষার জন্য যুগে যুগে গ্রহন করেছেন নানা ধরনের পদক্ষেপ, গড়ে তুলেছেন অগনিত প্রতিষ্ঠান। তবে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাহাবায়ে কিরাম (রাঃ) গনের কোরআন শরীফ পঠনরীতি অনুযায়ী বিশ্বে এ পর্যন্ত যেসব কিরাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে এবং বিশুদ্ধভাবে কোরআন শরীফ শিক্ষা ক্ষেত্রে বিস্ময়কর অবদান রেখেছে তাদের মধ্যে অনন্য প্রতিষ্ঠান হচ্ছে দারুল ক্বিরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাষ্ট।

 

এই বিস্ময়কর ও অনন্য প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছেন শামসুল উলামা আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা (রাহঃ)। ১৯৪০ সালে প্রতিষ্ঠিত এ প্রতিষ্ঠানের ছাত্র সংখ্যা অতি দ্রুত গতিতে ব্রৃদ্ধি পাওয়ায় একটি বোর্ড গঠনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। শামসুল উলামা আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা (রাহঃ) এর শ্রদ্ধেয় পিতা মাওলানা মুফতি আব্দুল মজিদ চৌধুরী (রাহঃ) এর নামানুসারে এ বোর্ডের নামকরণ করা হয় দারুল ক্বিরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাষ্ট । শুধু বাংলাদেশ

ও ভারত নয়, বরং গ্রেট ব্রৃটেন আমেরিকা ইউরোপসহ বিশ্বের অনেক দেশে রয়েছে এ বোর্ডের অনুমোদিত অসংখ্য শাখা- প্রশাখা। দারুল কিরাতের হাজার হাজার শাখা-প্রশাখা এ বোর্ডের মাধ্যমেই অত্যন্ত সুচারু ও সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা করা হয়।দারুল ক্বিরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাষ্ট, ইতিহাস বিখ্যাত একটি প্রতিষ্ঠান।

এই প্রতিষ্ঠানের পরিধি ও পরিব্যাবতি বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত। বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠতম ঐতিহাসিক মহান ব্যক্তিত্ব আল্লামা ফুলতলী ছাহেব

কিবলা (রাহঃ) এর প্রতিষ্ঠিত দারুল ক্বিরাতের প্রতিষ্ঠান এতো বিশালতা লাভ করার কারন জানতে হলে এর উৎপত্তির ইতিহাস প্রথমেই জানতে হবে। জানতে হবে এর পিছনে আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা (রাহঃ) এর কিরুপ নিরলস পরিশ্রম ও ঐকান্তিকতা ছিল।

আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা (রহঃ) ভারতের রামপুর আলিয়া মাদ্রাসা থেকে উচ্চ শিক্ষা সমাপ্ত করে আসামের বদরপুর আলিয়া মাদ্রাসায় নিয়োজিত তখন একদিন তাঁর মুর্শিদ হযরত শাহ মোহাম্মদ ইয়াকুব বদরপুরী (রঃ) বিশুদ্ধ কোরআন শরীফ শিক্ষার নির্দেশ দেন। মুর্শিদের নির্দেশক্রমে প্রথমে তিনি স্বীয় মুর্শিদের নিকট থেকে বিশুদ্ধ কোরআন শরীফ শিক্ষার তালিম নেন। স্বীয় মুর্শিদের নিকট হতে কিরাতের সনদ লাভ করার পর তাঁর নির্দেশ মোতাবেক বিশ্ববিখ্যাত ক্বারী হযরত ইরকসুস আল মিসরী (র) এর অন্যতম ছাত্র মাওলানা আব্দুর রউফ করমপুরী (র) এর নিকট থেকে ইলমে ক্বিরাতের সনদ লাভ করেন।

আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা (রহঃ) মাওলানা আব্দুর রউফ করমপুরী (র) এর নিকট থেকে ইলমে ক্বিরাতের সনদ লাভ করার পর মক্কা শরীফে অবস্থান করে বিশ্বখ্যাত ক্বারী, হারাম শরীফের ইমামগনের পরীক্ষক, রইসুল কুররা হযরত আহমদ হেজাজী (রহ.) এর নিকট থেকে ইলমে ক্বিরাতের সনদ লাভ করেন।

ইলমে ক্বিরাতের সনদ লাভে তাঁর কঠোর সাধনা আল্লাহর দরবারে কবুল হয়ে যায় এবং এরই বদৌলতে আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা বিশ্বখ্যাতী লাভ করেন। মক্কা শরীফ হতে দেশে ফিরে আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা (রহ.) পুনরায় বদরপুর আলিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষাদান শুরু করেন। একদিন ক্লাসে ছাত্রদের দরস দেওয়ার সময় সেখানে হযরত মাওলানা আব্দুন নূর গড়কাপনী (রহ.) তশরীফ নিলেন। সমকালীন খ্যাতনামা আলিম ও বুজুর্গ ছিলেন তিনি। আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা (রহ.) তাঁকে সমাদরে পাশে বসতে অনুরোধ করে পাঠদানে ব্যস্ত হলেন। ক্লাসের সময় শেষ হলে তিনি তাঁর কুশলাদি ও আসার কারন জানতে চাইলে মাওলানা আব্দুন নূর গড়কাপনী (রহ.) বললেন, সর্বসাধারন তো দূরের কথা এতদঞ্চলের বেশ কিছু সংখ্যক আলিমের ও কুরআন শরীফর পড়া বিশুধ নয়। তাই তিনি যেন আমাদেরকে সপ্তাহে কিছু সময় দেন।

আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা (রহ.) জবাবে বললেন, আমার হাতে সময় একেবারে কম,বিশেষ করে ক্লাসে ছাত্রদের পাঠদানের আগে নিজে ভালভাবে তা দেখে নিতে হয়, তাই সময় দেয়া মোটেই সম্বব নয়।

একথা বলার পর আল্লামা আব্দুন নূর গড়কাপনী (রহ.) চলে গেলেন। পরদিন ঠিক একইভাবে উপস্থিত হয়ে এ কথারই পুনরাবৃত্তি করলে আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা (রহ.) আবার ও বিনীত ভাবে অপারগতা প্রকাশ করলেন।

তখন আল্লামা আব্দুন নূর গড়কাপনী (রহ.) বললেন, আমি নিজে থেকে আপনার নিকট আসিনি। বড় জায়গা থেকে নির্দেশ পেয়েই আপনার শরনাপন্ন হয়েছি। আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা (রহ.) স্বীয় মুর্শিদ হযরত শাহ মোহাম্মদ ইয়াকুব বদরপুরী (রঃ) এর নির্দেশ কিনা জানতে চাইলে আল্লামা আব্দুন নূর গড়কাপনী (রহ.) বললেন, না আরো বড় জায়গা থেকে নির্দেশ পেয়েছি।

আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা (রহ.) এর অনুরোধে আল্লামা আব্দুন নূর গড়কাপনী (রহ.) বর্ণনা করলেনঃ বর্তমান সময়ে আলিম সমাজের মাঝে যে ফিতনা সৃষ্টি হয়েছে দোয়াল্লীন আর জোয়াল্লীন নিয়ে কোনটা সঠিক যদি হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পেতাম তাহলে জিজ্ঞেস করে নিতাম, এই খায়েশ নিয়ে ঘুমিয়ে পরলাম তখন সপ্ন যুগে হুজুরে পুর নূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে দিদার নসীব হয়। আমি জিজ্ঞাসা করলাম ইয়া রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোরআন শরীফের

তিলাওয়াত শুনতে চাই। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিলাওয়াত করে শুনালেন। আরজ করলাম ইয়া রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই ক্বিরাত কিভাবে শিখব? তখন হুজুরে পুর নূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ডান দিকে ইশারা করে দেখিয়ে বললেন ঐ ব্যক্তির নিকট শিক্ষা করলে বুঝবে আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট শিক্ষা করেছ। তখন আমি ডান দিকে চেয়ে দেখি সেই সৌভাগ্যবান ব্যাক্তি আপনি।

তখন আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা (রহ.), আল্লামা আব্দুন নূর গড়কাপনী (রহ.) কে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেললেন আর বললেন আমি প্রতি ব্রৃহস্পতিবার বারোটার পরে হযরত আদম খাকী (রহ.) এর মাজার সংলগ্ন মসজিদে ক্বিরাতের দরস দেওয়ার ওয়াদা দিলাম। এভাবেই আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা (রহ.) ক্বিরাত শিক্ষাদান শুরু করলেন। তিনি বিভিন্ন স্থানে পায়ে হেঁটে, ঘোড়ায় চড়ে গিয়ে পবিত্র কুরআন শিক্ষা দান করতেন সম্পূর্ণ নিষ্ঠার সাথে। তাঁর জীবনের শ্রেষ্ঠ অবদানই হচ্ছে আজকের দারুল ক্বিরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাষ্ট। তাঁর এই অবদান ইতিহাসে চির অম্লান, অব্যয়, অক্ষয় হয়ে থাকবে। তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন পৃথিবীর ইতিহাসে একমাত্র কুরআনের জন্য।

নামাজ বিশুদ্ধ হওয়ার পূর্বশর্ত হচ্ছে ক্বিরাত বিশুদ্ধ হওয়া। যত বড় আলিম হোন না কেন, যত বড় মুফাসসির, মুহাদ্দিস হোন না কেন, যদি তাঁর ক্বিরাত বিশুদ্ধ না হয় তবে তাঁর নামাজ বিশুদ্ধ হবেনা। তার জন্য ইমামতি করা মোটে ও বিশুদ্ধ হবেনা, এমন ব্যক্তিকে ইমাম নিয়োগ করাও জায়েজ হবেনা। এই সত্যটি আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা (রহ.) উপলব্দি করতে পেরে দারুল ক্বিরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাষ্ট নামের প্রতিষ্ঠান টি প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন। যেখানে লক্ষ লক্ষ ছাত্র, আলিম উলামা ক্বিরাত শিক্ষা লাভ করছেন। বিশ্বজুড়ে চলছে আজ দারুল ক্বিরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাস্টের মাধ্যমে পবিত্র কোরআন শরীফের খেদমত ইতিহাস এই খেদমত কোনদিন ভুলবে না। এই দারুল ক্বিরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাস্টের জন্য শামসুল উলামা আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা (রহ.) সীমাহীন ত্যাগ স্বীকার করেছেন, ত্যাগ স্বীকার করেছেন তাঁর ছাহেবজাদাগন ও। দারুল ক্বিরাতের জন্য শামসুল উলামা আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা (রহ.) তাঁর ভূসম্পত্তির ৩৩ একর জমি ওয়াকফ করে রেখেছেন। দারুল ক্বিরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাষ্ট শামসুল উলামা আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা (রহ.) এর বিস্ময়কর অবদান এবং পরিশেষে উনি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানান।উপস্থিত কমিউনিটির শীর্ষ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বাচ্চাদের পড়া শুনা দেখে ভূয়শী প্রশংসা এবং সকল প্রকার সহযোগিতার আশ্বস্ত করেন। পরে মিলাদ মাহফিল ও দোয়ার মধ্য দিয়ে শেষ হয় অনুষ্ঠান দোয়া পরিচালনা করেন শাহজালাল লতিফিয়া মসজিদের সভাপতি মাওলানা খলিলুর রহমান এবং অনুস্টান শেষে উপস্থিত সবার জন্য বাংলাদেশ এসোসিয়েশন ইন স্পেনের সাবেক সভাপতি এস আর আই এস রবিন এর পক্ষ থেকে  নৈশভোজের ব্যাবস্থা করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

মাদ্রিদে দারুল কিরাত মজিদিয়া ফুলতলি ট্রাস্ট এর পুরস্কার বিতরণী সম্পন্ন

আপডেট সময় : ০৬:৫৪:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২১

দারুল কিরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাস্ট শাহজালাল লতিফিয়া বাংলাদেশ জামে মসজিদ মাদ্রিদ শাখার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৯ সেপ্টেম্বর রবিবার দুপুর ১২ টায় স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদের শাহজালাল লতিফিয়া বাংলাদেশ মসজিদে এ অনুষ্ঠান  সম্পন্ন হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মাওলানা খলিলুর রাহমান ও অনুষ্ঠানটি পরিচালনা  করেন মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আজমল হোসেন। এতে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ এসোসিয়েশন ইন স্পেনের সভাপতি কাজী এনায়েতুল করিম তারেক, সাবেক সভাপতি আল মামুন,বর্তমান সিনিয়র সহ সভাপতি আল আমিন মিয়া, সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান সুন্দর, গ্রেটার সিলেটের সাবেক আহবায়ক কাইয়ুম আহমদ মাসুক, এসোসিয়েশন ভালিয়েন্তে বাংলার সভাপতি ফজলে এলাহি, সাধারণ সম্পাদক রমিজ উদ্দিন,প্রবিন কমিউনিটি নেতা ফয়জুর রহমান (বড় ভাই),হাবীব আলী, জকিগঞ্জ প্রবাসী কল্যাণ পরিষদের সভাপতি আসাদুজ্জামান সাদ,নারায়ণগঞ্জ জেলা এসোসিয়েশন ইন স্পেনের সভাপতি একরামুজ্জামান কিরন,ঢাকা জেলা এসোসিয়েশন ইন স্পেনের সাধারণ সম্পাদক এইচ এম মাসুদুর রহমান,ব্যাবসায়ী সাইফুল ইসলাম ইকবাল, জাহাঙ্গীর আলম , বদরুল কামালীসহ অনুষ্ঠানে দারুল কিরাতের শিক্ষকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হাফিজ আবুল কাশেম,হাফিজ উসমান, হাফিজ সাইদুল ইসলাম, মাওলানা আব্দুল হামিদ,মাওলানা আতিকুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন কাওসার হোসেন টিপু,শহীদুর রহমান, সাজ্জাদ হোসেন, নুর আহমদ প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে জমাতে ছুরা (ক)  (খ) থেকে জমাতে আওয়াল পর্যন্ত প্রতিটি শ্রেণিতে প্রথম তিন স্থান অধিকারীদের পুরস্কার দেওয়া হয়। মোট ৩ টি শ্রেণিতে ৩৬ জন শিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করা হয়। একই সঙ্গে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সব শিক্ষার্থীকে  পুরস্কার প্রদান করা হয়। প্রতি বছরের মতো এবারও প্রতিটি শ্রেণিতে কিরাত প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের এবং সকল শিক্ষার্থীদের সাধারণ পুরস্কার দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়।

এবারের আয়োজনে ৪ জন ক্বারি সাহেবদের তত্ত্বাবধানে প্রায় ৫০/৬০ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। অনুষ্ঠানে শাহজালাল লতিফিয়া বাংলাদেশ জামে মসজিদের সভাপতি  মাওলানা খলিলুর রহমান সহ বিভিন্ন বক্তাদের বক্তব্যে দারুল কিরাত মজিদিয়া ফুলতলি ট্রাস্টের অতীত ইতিহাস ফুটে ওঠে। বক্তারা তাদের বক্তব্যে বলেন, দারুল ক্বিরাত.মানে বিশুদ্ধ কোরআন শরীফ শিক্ষার প্রতিষ্ঠান।যে প্রতিষ্ঠানে পবিত্র কোরআন শরীফ বিশুদ্ধভাবে পাঠ করার নিয়ম পদ্ধতি জানা যায় সেই প্রতিষ্ঠানকে দারুল ক্বিরাত বলা হয়।

মহাগ্রন্থ আল কোরআন মজিদের একটি ব্যতিক্রমধর্মী বৈশিষ্ট হল এর অনন্য পঠনরীতি। আল্লাহ পাক তাঁর কালামকে তারতীলের অর্থাৎ তাজবীদের সাথে পাঠ করার নির্দেশ দিয়েছেন। মহান আল্লাহ পাকের নির্দেশ অনুযায়ী তাজবীদসহ কোরআন শরীফ পাঠের ধারাবাহিকতা বিশ্বনবী মুহাম্মাদুর.রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সময় হতে চলে আসছে। এরই লক্ষে উলামায়ে কিরামগন কোরআন শরীফ শিক্ষার জন্য যুগে যুগে গ্রহন করেছেন নানা ধরনের পদক্ষেপ, গড়ে তুলেছেন অগনিত প্রতিষ্ঠান। তবে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সাহাবায়ে কিরাম (রাঃ) গনের কোরআন শরীফ পঠনরীতি অনুযায়ী বিশ্বে এ পর্যন্ত যেসব কিরাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে এবং বিশুদ্ধভাবে কোরআন শরীফ শিক্ষা ক্ষেত্রে বিস্ময়কর অবদান রেখেছে তাদের মধ্যে অনন্য প্রতিষ্ঠান হচ্ছে দারুল ক্বিরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাষ্ট।

 

এই বিস্ময়কর ও অনন্য প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছেন শামসুল উলামা আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা (রাহঃ)। ১৯৪০ সালে প্রতিষ্ঠিত এ প্রতিষ্ঠানের ছাত্র সংখ্যা অতি দ্রুত গতিতে ব্রৃদ্ধি পাওয়ায় একটি বোর্ড গঠনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। শামসুল উলামা আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা (রাহঃ) এর শ্রদ্ধেয় পিতা মাওলানা মুফতি আব্দুল মজিদ চৌধুরী (রাহঃ) এর নামানুসারে এ বোর্ডের নামকরণ করা হয় দারুল ক্বিরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাষ্ট । শুধু বাংলাদেশ

ও ভারত নয়, বরং গ্রেট ব্রৃটেন আমেরিকা ইউরোপসহ বিশ্বের অনেক দেশে রয়েছে এ বোর্ডের অনুমোদিত অসংখ্য শাখা- প্রশাখা। দারুল কিরাতের হাজার হাজার শাখা-প্রশাখা এ বোর্ডের মাধ্যমেই অত্যন্ত সুচারু ও সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা করা হয়।দারুল ক্বিরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাষ্ট, ইতিহাস বিখ্যাত একটি প্রতিষ্ঠান।

এই প্রতিষ্ঠানের পরিধি ও পরিব্যাবতি বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত। বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠতম ঐতিহাসিক মহান ব্যক্তিত্ব আল্লামা ফুলতলী ছাহেব

কিবলা (রাহঃ) এর প্রতিষ্ঠিত দারুল ক্বিরাতের প্রতিষ্ঠান এতো বিশালতা লাভ করার কারন জানতে হলে এর উৎপত্তির ইতিহাস প্রথমেই জানতে হবে। জানতে হবে এর পিছনে আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা (রাহঃ) এর কিরুপ নিরলস পরিশ্রম ও ঐকান্তিকতা ছিল।

আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা (রহঃ) ভারতের রামপুর আলিয়া মাদ্রাসা থেকে উচ্চ শিক্ষা সমাপ্ত করে আসামের বদরপুর আলিয়া মাদ্রাসায় নিয়োজিত তখন একদিন তাঁর মুর্শিদ হযরত শাহ মোহাম্মদ ইয়াকুব বদরপুরী (রঃ) বিশুদ্ধ কোরআন শরীফ শিক্ষার নির্দেশ দেন। মুর্শিদের নির্দেশক্রমে প্রথমে তিনি স্বীয় মুর্শিদের নিকট থেকে বিশুদ্ধ কোরআন শরীফ শিক্ষার তালিম নেন। স্বীয় মুর্শিদের নিকট হতে কিরাতের সনদ লাভ করার পর তাঁর নির্দেশ মোতাবেক বিশ্ববিখ্যাত ক্বারী হযরত ইরকসুস আল মিসরী (র) এর অন্যতম ছাত্র মাওলানা আব্দুর রউফ করমপুরী (র) এর নিকট থেকে ইলমে ক্বিরাতের সনদ লাভ করেন।

আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা (রহঃ) মাওলানা আব্দুর রউফ করমপুরী (র) এর নিকট থেকে ইলমে ক্বিরাতের সনদ লাভ করার পর মক্কা শরীফে অবস্থান করে বিশ্বখ্যাত ক্বারী, হারাম শরীফের ইমামগনের পরীক্ষক, রইসুল কুররা হযরত আহমদ হেজাজী (রহ.) এর নিকট থেকে ইলমে ক্বিরাতের সনদ লাভ করেন।

ইলমে ক্বিরাতের সনদ লাভে তাঁর কঠোর সাধনা আল্লাহর দরবারে কবুল হয়ে যায় এবং এরই বদৌলতে আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা বিশ্বখ্যাতী লাভ করেন। মক্কা শরীফ হতে দেশে ফিরে আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা (রহ.) পুনরায় বদরপুর আলিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষাদান শুরু করেন। একদিন ক্লাসে ছাত্রদের দরস দেওয়ার সময় সেখানে হযরত মাওলানা আব্দুন নূর গড়কাপনী (রহ.) তশরীফ নিলেন। সমকালীন খ্যাতনামা আলিম ও বুজুর্গ ছিলেন তিনি। আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা (রহ.) তাঁকে সমাদরে পাশে বসতে অনুরোধ করে পাঠদানে ব্যস্ত হলেন। ক্লাসের সময় শেষ হলে তিনি তাঁর কুশলাদি ও আসার কারন জানতে চাইলে মাওলানা আব্দুন নূর গড়কাপনী (রহ.) বললেন, সর্বসাধারন তো দূরের কথা এতদঞ্চলের বেশ কিছু সংখ্যক আলিমের ও কুরআন শরীফর পড়া বিশুধ নয়। তাই তিনি যেন আমাদেরকে সপ্তাহে কিছু সময় দেন।

আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা (রহ.) জবাবে বললেন, আমার হাতে সময় একেবারে কম,বিশেষ করে ক্লাসে ছাত্রদের পাঠদানের আগে নিজে ভালভাবে তা দেখে নিতে হয়, তাই সময় দেয়া মোটেই সম্বব নয়।

একথা বলার পর আল্লামা আব্দুন নূর গড়কাপনী (রহ.) চলে গেলেন। পরদিন ঠিক একইভাবে উপস্থিত হয়ে এ কথারই পুনরাবৃত্তি করলে আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা (রহ.) আবার ও বিনীত ভাবে অপারগতা প্রকাশ করলেন।

তখন আল্লামা আব্দুন নূর গড়কাপনী (রহ.) বললেন, আমি নিজে থেকে আপনার নিকট আসিনি। বড় জায়গা থেকে নির্দেশ পেয়েই আপনার শরনাপন্ন হয়েছি। আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা (রহ.) স্বীয় মুর্শিদ হযরত শাহ মোহাম্মদ ইয়াকুব বদরপুরী (রঃ) এর নির্দেশ কিনা জানতে চাইলে আল্লামা আব্দুন নূর গড়কাপনী (রহ.) বললেন, না আরো বড় জায়গা থেকে নির্দেশ পেয়েছি।

আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা (রহ.) এর অনুরোধে আল্লামা আব্দুন নূর গড়কাপনী (রহ.) বর্ণনা করলেনঃ বর্তমান সময়ে আলিম সমাজের মাঝে যে ফিতনা সৃষ্টি হয়েছে দোয়াল্লীন আর জোয়াল্লীন নিয়ে কোনটা সঠিক যদি হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পেতাম তাহলে জিজ্ঞেস করে নিতাম, এই খায়েশ নিয়ে ঘুমিয়ে পরলাম তখন সপ্ন যুগে হুজুরে পুর নূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে দিদার নসীব হয়। আমি জিজ্ঞাসা করলাম ইয়া রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোরআন শরীফের

তিলাওয়াত শুনতে চাই। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিলাওয়াত করে শুনালেন। আরজ করলাম ইয়া রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই ক্বিরাত কিভাবে শিখব? তখন হুজুরে পুর নূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ডান দিকে ইশারা করে দেখিয়ে বললেন ঐ ব্যক্তির নিকট শিক্ষা করলে বুঝবে আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট শিক্ষা করেছ। তখন আমি ডান দিকে চেয়ে দেখি সেই সৌভাগ্যবান ব্যাক্তি আপনি।

তখন আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা (রহ.), আল্লামা আব্দুন নূর গড়কাপনী (রহ.) কে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেললেন আর বললেন আমি প্রতি ব্রৃহস্পতিবার বারোটার পরে হযরত আদম খাকী (রহ.) এর মাজার সংলগ্ন মসজিদে ক্বিরাতের দরস দেওয়ার ওয়াদা দিলাম। এভাবেই আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা (রহ.) ক্বিরাত শিক্ষাদান শুরু করলেন। তিনি বিভিন্ন স্থানে পায়ে হেঁটে, ঘোড়ায় চড়ে গিয়ে পবিত্র কুরআন শিক্ষা দান করতেন সম্পূর্ণ নিষ্ঠার সাথে। তাঁর জীবনের শ্রেষ্ঠ অবদানই হচ্ছে আজকের দারুল ক্বিরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাষ্ট। তাঁর এই অবদান ইতিহাসে চির অম্লান, অব্যয়, অক্ষয় হয়ে থাকবে। তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন পৃথিবীর ইতিহাসে একমাত্র কুরআনের জন্য।

নামাজ বিশুদ্ধ হওয়ার পূর্বশর্ত হচ্ছে ক্বিরাত বিশুদ্ধ হওয়া। যত বড় আলিম হোন না কেন, যত বড় মুফাসসির, মুহাদ্দিস হোন না কেন, যদি তাঁর ক্বিরাত বিশুদ্ধ না হয় তবে তাঁর নামাজ বিশুদ্ধ হবেনা। তার জন্য ইমামতি করা মোটে ও বিশুদ্ধ হবেনা, এমন ব্যক্তিকে ইমাম নিয়োগ করাও জায়েজ হবেনা। এই সত্যটি আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা (রহ.) উপলব্দি করতে পেরে দারুল ক্বিরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাষ্ট নামের প্রতিষ্ঠান টি প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন। যেখানে লক্ষ লক্ষ ছাত্র, আলিম উলামা ক্বিরাত শিক্ষা লাভ করছেন। বিশ্বজুড়ে চলছে আজ দারুল ক্বিরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাস্টের মাধ্যমে পবিত্র কোরআন শরীফের খেদমত ইতিহাস এই খেদমত কোনদিন ভুলবে না। এই দারুল ক্বিরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাস্টের জন্য শামসুল উলামা আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা (রহ.) সীমাহীন ত্যাগ স্বীকার করেছেন, ত্যাগ স্বীকার করেছেন তাঁর ছাহেবজাদাগন ও। দারুল ক্বিরাতের জন্য শামসুল উলামা আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা (রহ.) তাঁর ভূসম্পত্তির ৩৩ একর জমি ওয়াকফ করে রেখেছেন। দারুল ক্বিরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাষ্ট শামসুল উলামা আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলা (রহ.) এর বিস্ময়কর অবদান এবং পরিশেষে উনি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানান।উপস্থিত কমিউনিটির শীর্ষ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বাচ্চাদের পড়া শুনা দেখে ভূয়শী প্রশংসা এবং সকল প্রকার সহযোগিতার আশ্বস্ত করেন। পরে মিলাদ মাহফিল ও দোয়ার মধ্য দিয়ে শেষ হয় অনুষ্ঠান দোয়া পরিচালনা করেন শাহজালাল লতিফিয়া মসজিদের সভাপতি মাওলানা খলিলুর রহমান এবং অনুস্টান শেষে উপস্থিত সবার জন্য বাংলাদেশ এসোসিয়েশন ইন স্পেনের সাবেক সভাপতি এস আর আই এস রবিন এর পক্ষ থেকে  নৈশভোজের ব্যাবস্থা করা হয়।