ঢাকা ০৪:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

বিশ্ব গণমাধ্যমেও শিশিরের ‘খবরপাঠ’

জনপ্রিয় অনলাইন
  • আপডেট সময় : ০১:৩৮:১৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ মার্চ ২০২১ ৭৩৬ বার পড়া হয়েছে

কয়েক দিন ধরে দেশের সবচেয়ে আলোচিত নাম বোধহয় তাসনুভা আনান শিশির। বাংলাদেশের প্রথম ট্রান্সজেন্ডার (রূপান্তরিত) নারী হিসেবে একটি বেসরকারি টেলিভিশনে সংবাদপাঠ শুরু করছেন তিনি। তার এমন অভূতপূর্ব সাফল্যে দেশের সীমানা ছাড়িয়ে প্রশংসার জোয়ার বইছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতেও।

গত ২৪ ঘণ্টায় শিশিরকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি, গার্ডিয়ান, ইন্ডিপেন্ডেন্ট, আল জাজিরা, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, ডনের মতো জনপ্রিয় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।

বিবিসি তাদের প্রতিবেদনের শিরোনাম করেছে ‘বাংলাদেশ’স ফার্স্ট ট্রান্সজেন্ডার নিউজ রিডার মেকস ডেব্যু’। হয়রানি ও হামলার শিকার, আত্মহননের চেষ্টা করা একটি মানুষ কীভাবে বাংলাদেশের প্রথম ট্রান্সজেন্ডার সংবাদপাঠক হলেন, সেই ঘটনা তুলে ধরেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটি।

যুক্তরাজ্যের আরেক প্রভাবশালী গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনের শিরোনাম ‘বাংলাদেশ’স ফার্স্ট ট্রান্সজেন্ডার নিউজ রিডার টেকস টু দ্য এয়ারওয়েভ ‘’। তারা বলেছে, সফলভাবে প্রথমবার সংবাদপাঠ শেষ করেই দৃঢ়চিত্তের এ নারীও সহকর্মীদের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তবে সেটি দুঃখের নয়, ছিল বহুদিনের স্বপ্নপূরণের খুশির কান্না।

ব্রিটিশ দৈনিক দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট সফলভাবে প্রথমবার সংবাদপাঠ শেষ করায় শিশিরের ভূয়সী প্রশংসা করেছে। শিরোনামে তারা লিখেছে, ‘‘বাংলাদেশ’স ফার্স্ট ট্রান্সজেন্ডার নিউজ অ্যাংকর প্রেইজড ফর পারফেক্ট ডেব্যু’’।

এদিন ডেইলি মেইলের শিরোনাম ছিল ‘‘মোমেন্ট বাংলাদেশ’স ফার্স্ট ট্রান্সজেন্ডার নিউজরিডার ব্রেকস ডাউন আফটার ফিনিশিং হার ফার্স্ট বুলেটিন’’। লন্ডনভিত্তিক গণমাধ্যমটি একাধিক ছবিসহ সুবিশাল প্রতিবেদন করেছে তাসনুভা শিশিরকে নিয়ে।

বাংলাদেশকে নিয়ে সম্প্রতি ‘বিতর্কিত’ প্রতিবেদন প্রকাশ করা কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনেও ইতিবাচকভাবে উঠে এসেছে তাসনুভা আনান শিশিরের সাফল্যগাথা। ‘‘আই ওয়াজ শেকিং ইনসাইড’: বাংলাদেশ’স ফার্স্ট ট্রান্সজেন্ডার টিভি অ্যাংকর’’ শিরোনামের বিশাল প্রতিবেদনে তারা শিশিরের সংগ্রামী জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছে।

বাংলাদেশের প্রথম ট্রান্সজেন্ডার সংবাদপাঠকের খবর গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করেছে ভারতের একঝাঁক সংবাদমাধ্যম। এর মধ্যে রয়েছে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, জি নিউজ, সংবাদ প্রতিদিন, জি ফাইভ, নিউজরুম পোস্ট, পিএনআই নিউজ, মিড-ডে, রিপাবলিক ওয়ার্ল্ড, ফ্রিপ্রেস জার্নাল, উইঅন নিউজ, টিভি নাইন, জাগরণ প্রভৃতি।

আন্তর্জাতিক নারী দিবসেই বাংলাদেশ তার প্রথম ট্রান্সজেন্ডার নারী সংবাদপাঠক পেয়েছে বলে উল্লেখ করেছে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

পাকিস্তানের প্রভাবশালী গণমাধ্যম ডন বলেছে, সংবাদপাঠক হিসেবে তাসনুভা শিশিরের অভিষেক ছিল বিশ্বমানের।

রয়টার্স শিরোনাম করেছে, ‘‘অ্যাংকরওম্যান: বাংলাদেশ’স ফার্স্ট ট্রান্সজেন্ডার নিউজরিডার হোপস টু ফস্টার অ্যাকসেপ্টেন্স’’ অর্থাৎ ‘গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধির আশায় বাংলাদেশের প্রথম রূপান্তরিত সংবাদপাঠক’।

 

এছাড়াও ভিয়েতনামের জিং নিউজ, হাঙ্গেরির ৪৪৪, ফ্রান্সভিত্তিক ইউরো নিউজ, বেলজিয়ামভিত্তিক আরটিএলেও এসেছে বাংলাদেশের প্রথম ট্রান্সজেন্ডার নারী সংবাদপাঠকের খবর।

জানা যায়, তাসনুভা শিশিরের জন্ম বাগেরহাটে, ১৯৯১ সালের ১৬ জুন। বাবার নাম সামসুল হক, মা জামিরুন বেগম। শিশির নারায়ণগঞ্জের সরকারি তোলারাম কলেজ থেকে সমাজকর্ম বিভাগে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করেন। ব্র্যাক জেমস পি গ্রান্ট স্কুল অব পাবলিক হেলথ থেকে পাবলিক হেলথ বিষয়ে আরও এক বছরের জন্য মাস্টার্স করছেন। সম্প্রতি বৈশাখী টেলিভিশনে সংবাদপাঠক হিসেবে যোগ দিয়েছেন তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

বিশ্ব গণমাধ্যমেও শিশিরের ‘খবরপাঠ’

আপডেট সময় : ০১:৩৮:১৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ মার্চ ২০২১

কয়েক দিন ধরে দেশের সবচেয়ে আলোচিত নাম বোধহয় তাসনুভা আনান শিশির। বাংলাদেশের প্রথম ট্রান্সজেন্ডার (রূপান্তরিত) নারী হিসেবে একটি বেসরকারি টেলিভিশনে সংবাদপাঠ শুরু করছেন তিনি। তার এমন অভূতপূর্ব সাফল্যে দেশের সীমানা ছাড়িয়ে প্রশংসার জোয়ার বইছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতেও।

গত ২৪ ঘণ্টায় শিশিরকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি, গার্ডিয়ান, ইন্ডিপেন্ডেন্ট, আল জাজিরা, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, ডনের মতো জনপ্রিয় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।

বিবিসি তাদের প্রতিবেদনের শিরোনাম করেছে ‘বাংলাদেশ’স ফার্স্ট ট্রান্সজেন্ডার নিউজ রিডার মেকস ডেব্যু’। হয়রানি ও হামলার শিকার, আত্মহননের চেষ্টা করা একটি মানুষ কীভাবে বাংলাদেশের প্রথম ট্রান্সজেন্ডার সংবাদপাঠক হলেন, সেই ঘটনা তুলে ধরেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটি।

যুক্তরাজ্যের আরেক প্রভাবশালী গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনের শিরোনাম ‘বাংলাদেশ’স ফার্স্ট ট্রান্সজেন্ডার নিউজ রিডার টেকস টু দ্য এয়ারওয়েভ ‘’। তারা বলেছে, সফলভাবে প্রথমবার সংবাদপাঠ শেষ করেই দৃঢ়চিত্তের এ নারীও সহকর্মীদের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তবে সেটি দুঃখের নয়, ছিল বহুদিনের স্বপ্নপূরণের খুশির কান্না।

ব্রিটিশ দৈনিক দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট সফলভাবে প্রথমবার সংবাদপাঠ শেষ করায় শিশিরের ভূয়সী প্রশংসা করেছে। শিরোনামে তারা লিখেছে, ‘‘বাংলাদেশ’স ফার্স্ট ট্রান্সজেন্ডার নিউজ অ্যাংকর প্রেইজড ফর পারফেক্ট ডেব্যু’’।

এদিন ডেইলি মেইলের শিরোনাম ছিল ‘‘মোমেন্ট বাংলাদেশ’স ফার্স্ট ট্রান্সজেন্ডার নিউজরিডার ব্রেকস ডাউন আফটার ফিনিশিং হার ফার্স্ট বুলেটিন’’। লন্ডনভিত্তিক গণমাধ্যমটি একাধিক ছবিসহ সুবিশাল প্রতিবেদন করেছে তাসনুভা শিশিরকে নিয়ে।

বাংলাদেশকে নিয়ে সম্প্রতি ‘বিতর্কিত’ প্রতিবেদন প্রকাশ করা কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনেও ইতিবাচকভাবে উঠে এসেছে তাসনুভা আনান শিশিরের সাফল্যগাথা। ‘‘আই ওয়াজ শেকিং ইনসাইড’: বাংলাদেশ’স ফার্স্ট ট্রান্সজেন্ডার টিভি অ্যাংকর’’ শিরোনামের বিশাল প্রতিবেদনে তারা শিশিরের সংগ্রামী জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছে।

বাংলাদেশের প্রথম ট্রান্সজেন্ডার সংবাদপাঠকের খবর গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করেছে ভারতের একঝাঁক সংবাদমাধ্যম। এর মধ্যে রয়েছে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, জি নিউজ, সংবাদ প্রতিদিন, জি ফাইভ, নিউজরুম পোস্ট, পিএনআই নিউজ, মিড-ডে, রিপাবলিক ওয়ার্ল্ড, ফ্রিপ্রেস জার্নাল, উইঅন নিউজ, টিভি নাইন, জাগরণ প্রভৃতি।

আন্তর্জাতিক নারী দিবসেই বাংলাদেশ তার প্রথম ট্রান্সজেন্ডার নারী সংবাদপাঠক পেয়েছে বলে উল্লেখ করেছে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

পাকিস্তানের প্রভাবশালী গণমাধ্যম ডন বলেছে, সংবাদপাঠক হিসেবে তাসনুভা শিশিরের অভিষেক ছিল বিশ্বমানের।

রয়টার্স শিরোনাম করেছে, ‘‘অ্যাংকরওম্যান: বাংলাদেশ’স ফার্স্ট ট্রান্সজেন্ডার নিউজরিডার হোপস টু ফস্টার অ্যাকসেপ্টেন্স’’ অর্থাৎ ‘গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধির আশায় বাংলাদেশের প্রথম রূপান্তরিত সংবাদপাঠক’।

 

এছাড়াও ভিয়েতনামের জিং নিউজ, হাঙ্গেরির ৪৪৪, ফ্রান্সভিত্তিক ইউরো নিউজ, বেলজিয়ামভিত্তিক আরটিএলেও এসেছে বাংলাদেশের প্রথম ট্রান্সজেন্ডার নারী সংবাদপাঠকের খবর।

জানা যায়, তাসনুভা শিশিরের জন্ম বাগেরহাটে, ১৯৯১ সালের ১৬ জুন। বাবার নাম সামসুল হক, মা জামিরুন বেগম। শিশির নারায়ণগঞ্জের সরকারি তোলারাম কলেজ থেকে সমাজকর্ম বিভাগে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করেন। ব্র্যাক জেমস পি গ্রান্ট স্কুল অব পাবলিক হেলথ থেকে পাবলিক হেলথ বিষয়ে আরও এক বছরের জন্য মাস্টার্স করছেন। সম্প্রতি বৈশাখী টেলিভিশনে সংবাদপাঠক হিসেবে যোগ দিয়েছেন তিনি।