রাশিয়া-ইউক্রেন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে সমঝোতার কাছাকাছি: তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- আপডেট সময় : ০১:১৭:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ মার্চ ২০২২ ৪৪৫ বার পড়া হয়েছে
তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসওগ্লু বলেছেন, রাশিয়া ও ইউক্রেন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে সমঝোতার কাছাকাছি পৌঁছেছে। আজ (রোববার) তুর্কি দৈনিক হুররিয়াতকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা জানান।
চাভুসওগ্লু বলেন, ‘রাশিয়া ও ইউক্রেন গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে একমত হয়েছে। বিশেষ করে আমরা দেখেছি যে তারা চুক্তির জন্য প্রথম চার দফায় সম্পূর্ণ একমত হয়েছে। কিছু বিষয়ে সমাধানের জন্য প্রেসিডেন্টদের পর্যায়ে যেতে হবে। উভয়পক্ষ এখন পর্যন্ত অর্জিত অগ্রগতি থেকে সরে না গেলে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আমি আশাবাদী।’
তিনি জানান, তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগানের সঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির ত্রিপক্ষীয় একটি বৈঠকের আয়োজন করতে চাচ্ছে আঙ্কারা।
এই বৈঠকের সম্ভাবনা রাশিয়া বা ইউক্রেনের নেতারা এখনো নাকচ করে দেননি উল্লেখ করে চাভুসওগ্লু বলেন, ‘আজ পর্যন্ত আমরা এর বিপক্ষে কাউকেই পাইনি। অন্য অনেক দেশ এই আয়োজনের (ইউক্রেন-রাশিয়া বৈঠক) চেষ্টা করেছে, তবুও তাদের তুরস্কে একত্রিত করতে পেরে আমরা আনন্দিত। সর্বশেষে তুরস্কে হোক বা অন্য কোনো দেশে, তাদের মিলিত হওয়া জরুরি।’
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ এবং ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা এই মাসের শুরুর দিকে তুরস্কের শহর আন্তালিয়াতে বৈঠক করেন। তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসওগ্লুও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। আলোচনায় সুনির্দিষ্ট কোনো ফলাফল আসেনি। এরপর ল্যাভরভ ও কুলেবার সঙ্গে আলোচনার জন্য গত সপ্তাহে রাশিয়া ও ইউক্রেনে যান চাভুসওগ্লু।
যুদ্ধরত দুই দেশ সফরের পর তুর্কি দৈনিক হুরিয়াতের সঙ্গে আলাপকালে চাভুসওগ্লু বলেন, গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার রাতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান ইউক্রেন নিয়ে ফোনে কথা বলেছেন। ওই ফোনালাপে রুশ প্রেসিডেন্ট ইউক্রেনের সঙ্গে শান্তিচুক্তির জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু দাবির কথা এরদোগানকে জানিয়েছেন।
দুই নেতার ফোনালাপের বিষয়ে এরদোগানের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা ও মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন জানিয়েছেন, রাশিয়ার দাবিগুলো দুই ধরনের। প্রথম এবং প্রধান দাবি, ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগ দিতে পারবে না। তাকে জোটনিরপেক্ষ থাকতে হবে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অবশ্য ন্যাটোতে যোগ না দেয়ার বিষয়টি এর মধ্যেই মেনে নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, ইউক্রেনকে নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়ার মধ্যে যেতে হবে। তাদের এটা প্রমাণ করতে হবে যে তারা রাশিয়ার জন্য হুমকি নয়। ইউক্রেনে রুশ ভাষা সংরক্ষিত করতে হবে। এ ছাড়া নাৎসিবাদ পরিত্যাগ করতে হবে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী। পশ্চিমারা আগ্রাসন হিসেবে বিবেচনা করলেও এটিকে রাশিয়ার ‘বিশেষ অভিযান’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।