ঢাকা ০৮:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিশো মেহ’জাবীন ব্যারিস্টার সুমনের বি’রুদ্ধে মা’মলার প্রস্তুতি

জনপ্রিয় অনলাইন
  • আপডেট সময় : ০৫:০৬:০৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ অগাস্ট ২০২১ ৮৭৫ বার পড়া হয়েছে

প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সিএমভির ইউটিউব চ্যানেল থেকে সমালোচনার মুখে ইউটিউব থেকে নামিয়ে দেওয়া হয় ঈদের নাট’ক ‘ঘটনা সত্য’। শুধু নামিয়ে দেওয়াই হয়নি, নাট’কে প্রচারিত সংলাপের কারণে ক্ষমা চাইলেন পরিচালক। পাশাপাশি নাট’কের দুই অ’ভিনয়শিল্পী আফরান নিশো ও মেহ’জাবীন চৌধুরী দর্শকের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

নাট’কটিতে আফরান নিশো অ’ভিনয় করেছেন ব্যক্তিগত গাড়ির ড্রাইভা’র চরিত্রে এবং মেহ’জাবীন অ’ভিনয় করেছেন কাজের বুয়ার চরিত্রে। নাট’কের শেষ দিকে বলা হয়, বাবা মা-র পাপের শা’স্তি বা কর্মফলের কারণে প্রতিব’ন্ধী সন্তান জন্মগ্রহণ করে। এই সংলাপের পর তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েন নাট’কের রচয়িতা, পরিচালক, কুশীলবরা।

এবার এই নাট’কের সংশ্লিষ্টদের নামে মা’মলার ঘোষণা দিলো প্রতিব’ন্ধী ব্যক্তিদের কয়েকটি সংগঠন। সেই সঙ্গে টেলিভিশনে ট’কশোতে দেশের ফুটবলকে ‘প্রতিব’ন্ধী ছে’লের’ সঙ্গে তুলনা করায় আলোচকের বি’রুদ্ধেও পৃথক মা’মলা করা হবে বলে জানিয়েছে তারা। মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক ভা’র্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে এসব কথা বলা হয়।

সংবাদ সম্মেলনটি পরিচালনা করেন উইমেন উইথ ডিজঅ্যাবিলিটি ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের (ডব্লিউডিডিএফ) নির্বাহী পরিচালক আশরাফুন নাহার, মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন প্রতিব’ন্ধী নাগরিক সংগঠন পরিষদের (পিএনএসপি) সালমা মাহবুব। প্রশ্নোত্তর পর্ব পরিচালনা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রেজাউল করিম সিদ্দিকী’ এবং অনুষ্ঠানের সার্বিক পরিচালনায় ছিলেন ন্যাশনাল কাউন্সিল অব ডিজঅ্যাবল উইমেনের সভাপতি নাসিমা আক্তার।

সেখানে আইনজীবী রেজাউল করিম সিদ্দিকী’ বলেন, তিনি নিজেও একজন প্রতিব’ন্ধী মানুষ। তিনি বাদী হয়ে পৃথক দুটি মা’মলা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। করোনাভাই’রাস পরিস্থিতির মধ্যে আ’দালতের কার্যক্রম স্বাভাবিক হলেই তিনি মা’মলা করবেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ২৩ জুলাই একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে ‘ঘটনা সত্য’ নাট’কটি প্রচার করা হয়। নাট’কটি ইউটিউবেও আপলোড করা হয়। নাট’কটিতে প্রতিব’ন্ধী সন্তান জন্ম দেওয়াকে কেন্দ্র করে মা–বাবার কা’ন্নাকাটির মাধ্যমে ভীতিকর পারিবারিক ও সামাজিক চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়। ইউটিউবে নাট’কটির প্রচারিত অংশে নেপথ্য কণ্ঠে প্রতিবন্ধিতাকে বলা হয়, ‘বাবা-মায়ের পাপের ফল’।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, চ্যানেলে প্রচারিত একটি ট’কশোতে দেশের ফুটবলের দুর্দশা বোঝাতে ‘প্রতিব’ন্ধী ছে’লে’ উল্লেখ করেন আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। আলোচকসহ অনুষ্ঠানটির বি’রুদ্ধেও পৃথক মা’মলা করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রতিব’ন্ধী জনগোষ্ঠীর আইনি অধিকার লঙ্ঘন করায় প্রতিব’ন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩-এর ৩৭ (৪) ধারায় মা’মলা করা হবে। প্রতিব’ন্ধী ব্যক্তিদের ৩৫০টি সংগঠন এ আইনি ব্যবস্থার পক্ষে সম’র্থন জানিয়েছে। আইনের ওই ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি পাঠ্যপুস্তকসহ যেকোনো প্রকাশনা এবং গণমাধ্যমে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রতিব’ন্ধী ব্যক্তি বা প্রতিবন্ধিতা স’ম্পর্কে নেতিবাচক শব্দ ব্যবহার করলে অনধিক তিন বছরের কারাদ’ণ্ড বা অনধিক পাঁচ লাখ টাকা জ’রিমানা বা উভ’য় দ’ণ্ডে দ’ণ্ডিত হবেন।

সম্মেলনের মূল প্রবন্ধে বলা হয়, প্রতিব’ন্ধী ব্যক্তিদের যখন সমাজ ও রাষ্ট্র সমান সুযোগ দিতে কুণ্ঠাবোধ করে, তখন তাদের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন হয়ে ওঠেন মা-বাবা। প্রতিব’ন্ধী সন্তান ‘বাবা-মায়ের পাপের ফল’ সমাজের একাংশের মধ্যে এ ভুল ও অবৈজ্ঞানিক বিশ্বা’স বিদ্যমান থাকায় প্রতিব’ন্ধী ব্যক্তি ও তাদের অ’ভিভাবকরা মানসিক নি’পীড়নের শিকার হন। সেই ভুল ধারণা ও নি’পীড়নকে বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে এই নাট’ক। এ ধারণা যে ঠিক নয়, নাট’কটিতে সে স’ম্পর্কে কোনো বার্তা দেওয়া হয়নি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

নিশো মেহ’জাবীন ব্যারিস্টার সুমনের বি’রুদ্ধে মা’মলার প্রস্তুতি

আপডেট সময় : ০৫:০৬:০৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১১ অগাস্ট ২০২১

প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সিএমভির ইউটিউব চ্যানেল থেকে সমালোচনার মুখে ইউটিউব থেকে নামিয়ে দেওয়া হয় ঈদের নাট’ক ‘ঘটনা সত্য’। শুধু নামিয়ে দেওয়াই হয়নি, নাট’কে প্রচারিত সংলাপের কারণে ক্ষমা চাইলেন পরিচালক। পাশাপাশি নাট’কের দুই অ’ভিনয়শিল্পী আফরান নিশো ও মেহ’জাবীন চৌধুরী দর্শকের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

নাট’কটিতে আফরান নিশো অ’ভিনয় করেছেন ব্যক্তিগত গাড়ির ড্রাইভা’র চরিত্রে এবং মেহ’জাবীন অ’ভিনয় করেছেন কাজের বুয়ার চরিত্রে। নাট’কের শেষ দিকে বলা হয়, বাবা মা-র পাপের শা’স্তি বা কর্মফলের কারণে প্রতিব’ন্ধী সন্তান জন্মগ্রহণ করে। এই সংলাপের পর তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েন নাট’কের রচয়িতা, পরিচালক, কুশীলবরা।

এবার এই নাট’কের সংশ্লিষ্টদের নামে মা’মলার ঘোষণা দিলো প্রতিব’ন্ধী ব্যক্তিদের কয়েকটি সংগঠন। সেই সঙ্গে টেলিভিশনে ট’কশোতে দেশের ফুটবলকে ‘প্রতিব’ন্ধী ছে’লের’ সঙ্গে তুলনা করায় আলোচকের বি’রুদ্ধেও পৃথক মা’মলা করা হবে বলে জানিয়েছে তারা। মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক ভা’র্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে এসব কথা বলা হয়।

সংবাদ সম্মেলনটি পরিচালনা করেন উইমেন উইথ ডিজঅ্যাবিলিটি ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের (ডব্লিউডিডিএফ) নির্বাহী পরিচালক আশরাফুন নাহার, মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন প্রতিব’ন্ধী নাগরিক সংগঠন পরিষদের (পিএনএসপি) সালমা মাহবুব। প্রশ্নোত্তর পর্ব পরিচালনা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রেজাউল করিম সিদ্দিকী’ এবং অনুষ্ঠানের সার্বিক পরিচালনায় ছিলেন ন্যাশনাল কাউন্সিল অব ডিজঅ্যাবল উইমেনের সভাপতি নাসিমা আক্তার।

সেখানে আইনজীবী রেজাউল করিম সিদ্দিকী’ বলেন, তিনি নিজেও একজন প্রতিব’ন্ধী মানুষ। তিনি বাদী হয়ে পৃথক দুটি মা’মলা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। করোনাভাই’রাস পরিস্থিতির মধ্যে আ’দালতের কার্যক্রম স্বাভাবিক হলেই তিনি মা’মলা করবেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ২৩ জুলাই একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে ‘ঘটনা সত্য’ নাট’কটি প্রচার করা হয়। নাট’কটি ইউটিউবেও আপলোড করা হয়। নাট’কটিতে প্রতিব’ন্ধী সন্তান জন্ম দেওয়াকে কেন্দ্র করে মা–বাবার কা’ন্নাকাটির মাধ্যমে ভীতিকর পারিবারিক ও সামাজিক চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়। ইউটিউবে নাট’কটির প্রচারিত অংশে নেপথ্য কণ্ঠে প্রতিবন্ধিতাকে বলা হয়, ‘বাবা-মায়ের পাপের ফল’।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, চ্যানেলে প্রচারিত একটি ট’কশোতে দেশের ফুটবলের দুর্দশা বোঝাতে ‘প্রতিব’ন্ধী ছে’লে’ উল্লেখ করেন আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। আলোচকসহ অনুষ্ঠানটির বি’রুদ্ধেও পৃথক মা’মলা করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রতিব’ন্ধী জনগোষ্ঠীর আইনি অধিকার লঙ্ঘন করায় প্রতিব’ন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩-এর ৩৭ (৪) ধারায় মা’মলা করা হবে। প্রতিব’ন্ধী ব্যক্তিদের ৩৫০টি সংগঠন এ আইনি ব্যবস্থার পক্ষে সম’র্থন জানিয়েছে। আইনের ওই ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি পাঠ্যপুস্তকসহ যেকোনো প্রকাশনা এবং গণমাধ্যমে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রতিব’ন্ধী ব্যক্তি বা প্রতিবন্ধিতা স’ম্পর্কে নেতিবাচক শব্দ ব্যবহার করলে অনধিক তিন বছরের কারাদ’ণ্ড বা অনধিক পাঁচ লাখ টাকা জ’রিমানা বা উভ’য় দ’ণ্ডে দ’ণ্ডিত হবেন।

সম্মেলনের মূল প্রবন্ধে বলা হয়, প্রতিব’ন্ধী ব্যক্তিদের যখন সমাজ ও রাষ্ট্র সমান সুযোগ দিতে কুণ্ঠাবোধ করে, তখন তাদের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন হয়ে ওঠেন মা-বাবা। প্রতিব’ন্ধী সন্তান ‘বাবা-মায়ের পাপের ফল’ সমাজের একাংশের মধ্যে এ ভুল ও অবৈজ্ঞানিক বিশ্বা’স বিদ্যমান থাকায় প্রতিব’ন্ধী ব্যক্তি ও তাদের অ’ভিভাবকরা মানসিক নি’পীড়নের শিকার হন। সেই ভুল ধারণা ও নি’পীড়নকে বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে এই নাট’ক। এ ধারণা যে ঠিক নয়, নাট’কটিতে সে স’ম্পর্কে কোনো বার্তা দেওয়া হয়নি।