কুলাউড়ায় নিখোজের ২৬ বছর পর ও সন্ধান মিলেনি হান্নানের
- আপডেট সময় : ০২:৩৫:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২১ ৮৮৪ বার পড়া হয়েছে
দিন যায়, মাস যায়, বছর যায় এভাবেই অপেক্ষার প্রহর বাড়ছে। একে একে কেটে গেছে ২৬টি বছর। তখন কুলাউড়ায় চলছিল বিজয়মেলা। মেলার সামনে থাকা গাড়ি স্ট্যান্ড থেকে লোকজন একটি মাইক্রোবাস ভাড়ায় নিলো। চালকের সঙ্গে ওই গাড়িতে মালিকও গেলেন। এরপর নিখোঁজ গাড়িসহ দু’জনই। থানায় মামলার পর তদন্ত এখান থেকে ওখানে গড়ায়। আজ অবধি নিখোঁজ দু’জনই ফিরে আসেননি।
নিখোঁজ দু’জন হলেন- কুলাউড়া পৌর শহরের উছলাপাড়া এলাকার বাসিন্দা মাইক্রোবাসের মালিক আব্দুল হান্নান ও গাড়িচালক পার্শ্ববর্তী জুড়ী উপজেলার বাসিন্দা গিয়াস মিয়া।
জানা গেছে, আব্দুল হান্নানের একটি মাইক্রোবাস ছিল। সেটি চালাতেন গিয়াস মিয়া। ১৯৯৫ সালের ১৫ই ডিসেম্বর সন্ধ্যায় চালক গিয়াস গাড়িটি নিয়ে কুলাউড়া পৌর শহরের নির্ধারিত স্ট্যান্ডে ছিলেন। এ সময় অপরিচিত ৭জন যুবক সেখানে আসেন। গাড়িটি ভাড়ায় নিতে চান। অগ্রিম ভাড়া হিসেবে যুবকেরা ১ হাজার ২০০ টাকা দেন। বাকি টাকা ঢাকায় পৌঁছে দেওয়ার কথা। এরপর গিয়াস ও হান্নান ওই যুবকদের নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এরপর আর তারা ফেরেননি।
এ ঘটনায় নিখোঁজ হান্নানের ভাই মতিউর রহমান বাদী হয়ে ওই বছরের ১৮ই ডিসেম্বর কুলাউড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। ২৫শে ডিসেম্বর সেটি মামলা আকারে রুজু হয়। পরবর্তীতে মামলাটি পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) স্থানান্তরিত হয়। ১৯৯৬ সালের ১৫ এপ্রিল ডিবি থেকে মামলাটি সিআইডিতে স্থানান্তর করা হয়। ঘটনার ২৬ বছর অতিবাহিত হলেও নিখোঁজ দুই ব্যক্তি অথবা গাড়িটির কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। আব্দুল হান্নানের পরিবারে তার স্ত্রী রহিমা আক্তার ও তিন ছেলে রয়েছেন। ছেলে শফিউল আলম সৌরভ বলেন, বাবা নিখোঁজের সময় তার বয়স মাত্র চার বছর ছিল। তিনি এখন মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। সৌরভ বলেন, বাবার খোঁজ পেতে পুলিশ, ডিবি, সিআইডি শেষমেশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যন্ত গিয়েছি। কেউ খোঁজ দিতে পারেনি। তদন্তে কি পাওয়া গেল, সেটাও জানা সম্ভব হয়নি। বাবা বেঁচে আছেন কি না তাও জানি না। এখনো আমরা তার অপেক্ষায় আছি। ওদিকে জুড়ী উপজেলায় খোঁজ করেও চালক গিয়াসের কোনো স্বজনকে পাওয়া যায়নি।
এলাকাবাসী জানান, একসময় গিয়াসের পরিবার মনতৈল এলাকায় থাকতো। বেশ কয়েক বছর আগে পরিবারের সদস্যরা অন্যত্র চলে গেছেন। কোথায় গেছেন সে ব্যাপারেও সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য দিতে পারেননি কেউ। মৌলভীবাজার ডিবি পুলিশের প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (বর্তমানে কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ) বিনয় ভূষণ রায় বলেন, ‘যেহেতু এটা অনেক আগের ঘটনা। তাই এ সম্পর্কে কোনো তথ্য আমার জানা নেই। তবে নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করলে বিষয়টি কি পর্যায়ে আছে, তা জানা সম্ভব’।