ইমরান খান গ্রেপ্তারে বেড়েছে জনপ্রিয়তা!

- আপডেট সময় : ০৮:২৬:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ মে ২০২৩ ২২৩ বার পড়া হয়েছে
এককালের ক্রিকেট সুপারস্টার যে একদিন একটি পরমাণু শক্তিধর দেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন, তা বছর দশেক আগেও হয়তো কেউ কল্পনা করেননি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ইমরান এবং তার দল পিটিআই পাকিস্তানের রাজনীতিতে ভূমিকম্প ঘটিয়েছেন, তা চমকে দিয়েছে অনেককে। গত বছর ইমরানকে ক্ষমতাচ্যুত করার মধ্যদিয়ে দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা নতুন মাত্রা পায়। এরপর থেকেই দেশটিতে অস্থিতিশীলতা ও মেরূকরণ বেড়েছে। ইমরান জোট সরকার ও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে একটি জনপ্রিয় বিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তার জনপ্রিয়তা এতই বেড়েছে যে, সম্প্রতি তোশাখানা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করতে গিয়েও পিছু হটতে বাধ্য হয় দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ কারণে তাকে গত মঙ্গলবার আদালত থেকে গ্রেপ্তার করে আধাসামরিক বাহিনী। কিন্তু পরিস্থিতি এতটা উত্তপ্ত হবে, তা হয়তো কেউ ভাবেনি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক রেজা রুমির মতে, বর্তমানে ইমরান তিনটি কৌশল অবলম্বন করে রাজনীতি করছেন। এগুলো হলো—ধর্মীয় মনোভাবকে কাজে লাগানো, রাজনৈতিক অভিজাতদের প্রতি ঘৃণার বিস্তার ও সীমাহীন দুর্নীতির লাগাম টানা। পাশাপাশি তিনি যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী মনোভাবও চাঙ্গা করতে সক্ষম হয়েছেন। সাবেক এই ক্রিকেটার তরুণদের মধ্যে অধিকার আদায়ের মনোভাবকে উসকে দিয়েছেন। এ ছাড়া তিনি জনগণের মনে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ক্ষোভের সঞ্চার করতে পেরেছেন। গত তিন দিনে দেশটির সাধারণ জনগণ সেটারই বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে।
বিক্ষোভকারীরা দেশটির বেশ কয়েকটি সেনানিবাসে হামলা চালায়। এ ছাড়া জেনারেল হেড কোয়ার্টার্স রাওয়ালপিন্ডি ও ফ্রন্টিয়ার কর্পসের কয়েকটি কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেনাবাহিনীবিরোধী হ্যাশট্যাগও চালু হয়েছে। এ ঘটনাকে দেশটির ইতিহাসের কালো অধ্যায় বলে বর্ণনা করেছে সেনাবাহিনী। এক বিবৃতিতে আইএসপিআর জানায়, একদল দুর্বৃত্ত রাজনৈতিক পোশাক পরে ক্ষমতার লালসায় সেনাবাহিনীর যে ক্ষতি করছে, সেটা ৭৫ বছরে শত্রুরাও করতে পারেনি।
সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে দেশটির মানুষের মনে ক্ষোভ এত বেশি জন্মেছে যে, জনগণ তাদের ভিলেন বলতেও দ্বিধা করছে না। তার প্রমাণ পাওয়া যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে করা পোস্টে। সেনাবাহিনীর সমালোচনা করতে গিয়ে তারা ১৯৭১ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিষয় বারবার তুলে ধরছেন। একজন লিখেছেন, বাঙালি ভাইয়েরা কখনোই আমাদের ঘৃণা করেননি। তারা কখনো পাকিস্তান মুর্দাবাদ বলে চিৎকার করেননি। শেখ মুজিব ছিলেন গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতা। তাহলে বুঝে নেন কে ছিল খলনায়ক। আরেকজন লেখেন, ১৯৭১ সালের মার্চে শেখ মুজিব যখন অসহযোগ আন্দোলন শুরু করেন, তখন পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী সহিংস দমনের পথ অবলম্বন করে। সে সময় সেনাবাহিনীর ক্রিয়াকলাপগুলো বর্তমানের মতোই ছিল। আর তা হলো ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং প্রতিপক্ষকে হত্যা। তাদের এসব মনোভাবই বলে দেয়, রাজনীতিতে সেনাবাহিনী আর হস্তক্ষেপ করুক, তা তারা চান না।
সুত্র : কাল বেলা