ঢাকা ১২:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
মজলিসু দাওয়াতুল হক বার্সেলোনার আয়োজনে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত স্পেনে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন বার্সেলোনায় বিশ্বনাথ আইডিয়াল অ্যাসোসিয়েশন আয়োজনে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বার্সেলোনায় বিজনেস অ্যাসোসিয়েশনের ইফতার সম্পন্ন বার্সেলোনায় কাপড়ের সমাহার নিয়ে “রোস প্যাটাল’স বাই তাইফা” প্রতিষ্ঠানের উদ্বোধন স্পেনে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন স্পেন বাংলা প্রেসক্লাব এর প্রথম সভা অনুষ্ঠিত বার্সেলোনায় স্বাধীনতা দিবস ক্রিকেট টুর্নামেন্ট সম্পন্ন অ্যাসোসিয়েশন কোলতুরাল উমানেতারিয়ার উদ্যোগে ওয়াজ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্টিত স্পেনের হুয়ান কার্লোস ইউনিভার্সিটিতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন

ইংল্যান্ডের স্বপ্ন ভেঙে ইউরোর চ্যাম্পিয়ন ইতালি

জনপ্রিয় অনলাইন
  • আপডেট সময় : ০৭:১০:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ জুলাই ২০২১ ৬৯০ বার পড়া হয়েছে

‘ফুটবল ঘরে ফিরবে’ এই আশায় ওয়েম্বলিতে উপস্থিত হাজার হাজার ইংল্যান্ড সমর্থকের চিৎকার আর গর্জনে শুরু থেকেই ইতালিয়ানদের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। কিন্তু স্বাগতিক দর্শকদের শেষে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরতে হলো।

কারণ তুমুল উত্তেজনায় ঠাসা ফাইনালে স্বাগতিকদের টাইব্রেকারে হারিয়ে ৫৩ বছর পর ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা ঘরে তুলেছে মানচিনির ইতালি। অর্থাৎ ফুটবল ‘হোমে’ নয় ‘রোমে’ ফিরলো।  রোববার রাতে লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ৬০ হাজার দর্শকের সামনে ইউরোর ফাইনালে মুখোমুখি হয় ইউরোপিয়ান ফুটবলের দুই পরাশক্তি। রোমাঞ্চকর এই ফাইনালে নির্ধারিত ৯০ মিনিট ও যোগ করা সময়ের খেলা ১-১ গোলে সমতা বিরাজ করায় ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেও সমতা থেকে যায়। ফলে খেলার ফলাফল নির্ধারিত হয় টাইব্রেকারে। যেখানে ৩-২ গোলে জিতে শিরোপা জিতে নেয় ইতালি।

পেনাল্টি শুটআউটে ইতালির নায়ক গোলরক্ষক দোনারুমা। ২টি শট ঠেকিয়ে দিয়েছেন তিনি।  পেনাল্টি শুট-আউটে প্রথমে গোল করেন ইতালির বেরারদি। এরপর গোল করেন ইংল্যান্ডের হ্যারি কেন। কিন্তু বেলোত্তির শট বাঁচিয়ে দেন ইংল্যান্ডের গোলরক্ষক পিকফোর্ড। এরপর গোল করে ইংল্যান্ডের হ্যারি ম্যাগুইর। ইতালির বোনুচ্চিও পান জালের দেখা। কিন্তু ইংল্যান্ডের রাশফোর্ডের শট পোস্টে প্রতিহত হয়। এরপর গোল করেন ইতালির বার্নারদেসচি। কিন্তু ইংল্যান্ডের সাঞ্চোর শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান দোনারুমা। অন্যদিকে ইতালির জর্জিনহোর শটও ঠেকিয়ে দেন পিকফোর্ড। এরপর সাকার শট ঠেকিয়ে ইতালির জয় নিশ্চিত করেন দোনারুমা।

ইতালি এই নিয়ে দ্বিতীয়বার ইউরোর শিরোপা ঘরে তুললো।  এর আগে ১৯৬৮ সালে চ্যাম্পিয়ন হয় তারা।

অন্যদিকে ইংল্যান্ড এবারই প্রথম ইউরোপ সেরার লড়াইয়ের ফাইনালে উঠেছে। আর সেজন্য খেলা শুরুর আগেই ওয়েম্বলিকে ঘিরে ছড়িয়ে পড়ে তুমুল উত্তেজনা। টিকিট ছাড়াই মাঠে ঢুকে পড়েন অসংখ্য ইংলিশ সমর্থক। এমনকি স্টেডিয়ামের বাইরে ইংল্যান্ড সমর্থকদের তাণ্ডব চালাতে এবং বিয়ারের বোতল ছুঁড়ে আস্ফালন করতেও দেখা গেছে। ইংল্যান্ড সমর্থকদের উন্মত্ততায় লন্ডনের রাস্তা কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে যায়। ট্রাফিক সিগন্যালের উপর উঠেও তাণ্ডব চালায় অনেক মানুষ। এর আগে ডেনমার্ক ম্যাচের পরেও ইংল্যান্ড সমর্থকদের এমন উন্মত্ত ছবি দেখা গিয়েছিল। এমনকি ড্যানিশ সমর্থকদের মারধোর করার অভিযোগও উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে।

ওয়েম্বলিতে ৬০ হাজার উত্তেজিত দর্শকের সামনে মাঠে নেমেই চমকে দেয় ইংল্যান্ড। ইংলিশ কোচ গ্যারেথ সাউথগ্যাটের ফর্মেশন চমক দেয় সবাইকে। খেলা শুরুর আগে এমন চমকে হতবাক হয়ে যায় প্রতিপক্ষ ইতালি। পুরো আসর জুড়ে ৪-২-৩-১ এবং ৪-৩-৩ ফর্মেশনে খেললেও, এদিন ৩-৪-২-১ ফর্মেশনে মাঠে নামে থ্রি লায়নরা। তবে প্রথাগত ফর্মেশন থেকে বের হননি মানচিনি।

ইতালি সেমিফাইনালের অপরিবর্তিত দল নিয়ে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ফাইনালের লড়াইয়ে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নেয়। এমনকি তারা বদলি ফুটবলারের তালিকাতেও কোনো বদল করেনি। ইংল্যান্ড তাদের প্রথম একাদশে একটি বদল করে। সাকার বদলে তারা শুরু থেকেই মাঠে নামানোর সিদ্ধান্ত নেয় ট্রিপিয়ারকে।

ইংল্যান্ড শুধু ফর্মেশন নয়, শুরুতেই গোল করেও চমকে দেয়। ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটে কর্নার কিক পায় ইতালি। কর্নার থেকে ভেসে আসা বল ক্লিয়ারই করা নয় শুধু নিজেদের নিয়ন্ত্রণেও ধরে রাখে ইংল্যান্ড। উঠে যায় কাউন্টার অ্যাটাকে। ইতালির বক্সের ডান পাশ থেকে বাম পাশে লম্বা পাস দেন কিয়েরান ট্রিপিয়ার। দ্রুত গতিতে এগিয়ে আসা লুক শ ডান পায়ের দুর্দান্ত এক শট নেন তাতে। মুহূর্তেই বলটি জড়িয়ে গেল ইতালির জালে।

নিজের প্রথম আন্তর্জাতিক গোলের দেখা ইউরোর ফাইনালে এসে পেলেন লুক শ। ইউরো কাপের ইতিহাসে একটি রেকর্ডও গড়লেন তিনি। ১ মিনিট ৫৭ সেকেন্ডে করা তার গোলটিই ইউরোর ফাইনাল ম্যাচে করা দ্রুততম গোল। ১৯৬৪ সালে পেরেদা ৬ মিনিটের মাথায় গোল করেছিলেন।

গোল হজম করার ৬ মিনিট পরেই সমতায় ফেরার সুযোগ পায় ইতালি। কিন্তু ইংল্যান্ডের পোস্ট লক্ষ্য করে শট নেওয়া ইনসাইনের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এরপর ১৭তম মিনিটে এমারসন অফসাইডের আওতায় পড়লে ভেস্তে যায় ইতালির আক্রমণ। ২৮তম মিনিটে ইতালির ইনসাইনের শট অল্পের জন্য লক্ষ্যে থাকেনি। ৩৫তম মিনিটে সিয়েসা সহজ সুযোগ নষ্ট করলে ব্যবধান কমাতে পারেনি ইতালি। যোগ করা সময়ে ভেরাত্তির আক্রমণ প্রতিহত করেন ইংলিশ গোলরক্ষক পিকফোর্ড। ফলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় ইংল্যান্ড।

দ্বিতীয়ার্ধেও জারি থাকে ইতালিয়ানদের আক্রমণের ধারা। ৫১ মিনিটের মাথায় ইনসাইনের আক্রমণ লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।  ৫৩তম মিনিটে ফের আক্রমণে ওঠে ইতালি। এবারও ইনসাইনের শট টার্গেটে ছিল না। দুই মিনিট পর ইংল্যান্ডের হ্যারি মাগুইর আক্রমণ শানান ইতালির বক্সে। কিন্তু তার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। ৫৭তম মিনিটে ইনসাইন শট নেন ইংল্যান্ডের পোস্ট লক্ষ্য করে। আক্রমণ প্রতিহত হয় পিকফোর্ডের দক্ষতায়।  ৬২তম মিনিটে ফের ইংল্যান্ডের পতন রোধ করেন পিকফোর্ড। একটু পর সিয়েসার আক্রমণও প্রতিহত করেন তিনি।

অবশেষে ৬৭তম মিনিটে প্রতিপক্ষের রক্ষণের জটলা থেকে গোল করেন বোনুচ্চি। ইনসিনিয়ের কর্নারে বল কাছের পোস্টে পড়লে ভেরাত্তি গোলমুখে হেড নেন। শুরুতে সেই হেড ঠেকিয়ে দেন পিকফোর্ড। কিন্তু তাকে পরাস্ত করে বল জালে জড়িয়ে দেন বোনুচ্চি। সেই সঙ্গে ইউরোর ফাইনালে সবথেকে বেশি বয়সে গোল করার রেকর্ডও গড়েন ইতালিয়ান ডিফেন্ডার ৩৪ বছর ৭১ দিন বয়সে ইউরোয় লড়াইয়ে গোল করার রেকর্ড গড়লেন তিনি। ১৯৭৬ সালে পশ্চিম জার্মানির হয়ে হলজেনবেইন ৩০ বছর বয়সে গোল করেছিলেন।

বোনুচ্চির গোলের পর আদতে দুই দলই তেমন ভালো কোনো আক্রমণ শানাতে না পারলে খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের একদম শেষদিকে ইংল্যান্ডের ফিলিপসের আক্রমণ ব্যর্থ হয়। ১০৭ মিনিটের মাথায় বার্নারদেসচির আক্রমণ প্রতিহত করেন পিকফোর্ড। যোগ করা সময়ে ক্রিস্তান্তের শট লক্ষভ্রষ্ট হয়। ফলে এখানেও দুই অর্ধই থাকে গোলশূন্য। ফলে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

ইংল্যান্ডের স্বপ্ন ভেঙে ইউরোর চ্যাম্পিয়ন ইতালি

আপডেট সময় : ০৭:১০:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ জুলাই ২০২১

‘ফুটবল ঘরে ফিরবে’ এই আশায় ওয়েম্বলিতে উপস্থিত হাজার হাজার ইংল্যান্ড সমর্থকের চিৎকার আর গর্জনে শুরু থেকেই ইতালিয়ানদের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। কিন্তু স্বাগতিক দর্শকদের শেষে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরতে হলো।

কারণ তুমুল উত্তেজনায় ঠাসা ফাইনালে স্বাগতিকদের টাইব্রেকারে হারিয়ে ৫৩ বছর পর ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা ঘরে তুলেছে মানচিনির ইতালি। অর্থাৎ ফুটবল ‘হোমে’ নয় ‘রোমে’ ফিরলো।  রোববার রাতে লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ৬০ হাজার দর্শকের সামনে ইউরোর ফাইনালে মুখোমুখি হয় ইউরোপিয়ান ফুটবলের দুই পরাশক্তি। রোমাঞ্চকর এই ফাইনালে নির্ধারিত ৯০ মিনিট ও যোগ করা সময়ের খেলা ১-১ গোলে সমতা বিরাজ করায় ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেও সমতা থেকে যায়। ফলে খেলার ফলাফল নির্ধারিত হয় টাইব্রেকারে। যেখানে ৩-২ গোলে জিতে শিরোপা জিতে নেয় ইতালি।

পেনাল্টি শুটআউটে ইতালির নায়ক গোলরক্ষক দোনারুমা। ২টি শট ঠেকিয়ে দিয়েছেন তিনি।  পেনাল্টি শুট-আউটে প্রথমে গোল করেন ইতালির বেরারদি। এরপর গোল করেন ইংল্যান্ডের হ্যারি কেন। কিন্তু বেলোত্তির শট বাঁচিয়ে দেন ইংল্যান্ডের গোলরক্ষক পিকফোর্ড। এরপর গোল করে ইংল্যান্ডের হ্যারি ম্যাগুইর। ইতালির বোনুচ্চিও পান জালের দেখা। কিন্তু ইংল্যান্ডের রাশফোর্ডের শট পোস্টে প্রতিহত হয়। এরপর গোল করেন ইতালির বার্নারদেসচি। কিন্তু ইংল্যান্ডের সাঞ্চোর শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান দোনারুমা। অন্যদিকে ইতালির জর্জিনহোর শটও ঠেকিয়ে দেন পিকফোর্ড। এরপর সাকার শট ঠেকিয়ে ইতালির জয় নিশ্চিত করেন দোনারুমা।

ইতালি এই নিয়ে দ্বিতীয়বার ইউরোর শিরোপা ঘরে তুললো।  এর আগে ১৯৬৮ সালে চ্যাম্পিয়ন হয় তারা।

অন্যদিকে ইংল্যান্ড এবারই প্রথম ইউরোপ সেরার লড়াইয়ের ফাইনালে উঠেছে। আর সেজন্য খেলা শুরুর আগেই ওয়েম্বলিকে ঘিরে ছড়িয়ে পড়ে তুমুল উত্তেজনা। টিকিট ছাড়াই মাঠে ঢুকে পড়েন অসংখ্য ইংলিশ সমর্থক। এমনকি স্টেডিয়ামের বাইরে ইংল্যান্ড সমর্থকদের তাণ্ডব চালাতে এবং বিয়ারের বোতল ছুঁড়ে আস্ফালন করতেও দেখা গেছে। ইংল্যান্ড সমর্থকদের উন্মত্ততায় লন্ডনের রাস্তা কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে যায়। ট্রাফিক সিগন্যালের উপর উঠেও তাণ্ডব চালায় অনেক মানুষ। এর আগে ডেনমার্ক ম্যাচের পরেও ইংল্যান্ড সমর্থকদের এমন উন্মত্ত ছবি দেখা গিয়েছিল। এমনকি ড্যানিশ সমর্থকদের মারধোর করার অভিযোগও উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে।

ওয়েম্বলিতে ৬০ হাজার উত্তেজিত দর্শকের সামনে মাঠে নেমেই চমকে দেয় ইংল্যান্ড। ইংলিশ কোচ গ্যারেথ সাউথগ্যাটের ফর্মেশন চমক দেয় সবাইকে। খেলা শুরুর আগে এমন চমকে হতবাক হয়ে যায় প্রতিপক্ষ ইতালি। পুরো আসর জুড়ে ৪-২-৩-১ এবং ৪-৩-৩ ফর্মেশনে খেললেও, এদিন ৩-৪-২-১ ফর্মেশনে মাঠে নামে থ্রি লায়নরা। তবে প্রথাগত ফর্মেশন থেকে বের হননি মানচিনি।

ইতালি সেমিফাইনালের অপরিবর্তিত দল নিয়ে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ফাইনালের লড়াইয়ে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নেয়। এমনকি তারা বদলি ফুটবলারের তালিকাতেও কোনো বদল করেনি। ইংল্যান্ড তাদের প্রথম একাদশে একটি বদল করে। সাকার বদলে তারা শুরু থেকেই মাঠে নামানোর সিদ্ধান্ত নেয় ট্রিপিয়ারকে।

ইংল্যান্ড শুধু ফর্মেশন নয়, শুরুতেই গোল করেও চমকে দেয়। ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটে কর্নার কিক পায় ইতালি। কর্নার থেকে ভেসে আসা বল ক্লিয়ারই করা নয় শুধু নিজেদের নিয়ন্ত্রণেও ধরে রাখে ইংল্যান্ড। উঠে যায় কাউন্টার অ্যাটাকে। ইতালির বক্সের ডান পাশ থেকে বাম পাশে লম্বা পাস দেন কিয়েরান ট্রিপিয়ার। দ্রুত গতিতে এগিয়ে আসা লুক শ ডান পায়ের দুর্দান্ত এক শট নেন তাতে। মুহূর্তেই বলটি জড়িয়ে গেল ইতালির জালে।

নিজের প্রথম আন্তর্জাতিক গোলের দেখা ইউরোর ফাইনালে এসে পেলেন লুক শ। ইউরো কাপের ইতিহাসে একটি রেকর্ডও গড়লেন তিনি। ১ মিনিট ৫৭ সেকেন্ডে করা তার গোলটিই ইউরোর ফাইনাল ম্যাচে করা দ্রুততম গোল। ১৯৬৪ সালে পেরেদা ৬ মিনিটের মাথায় গোল করেছিলেন।

গোল হজম করার ৬ মিনিট পরেই সমতায় ফেরার সুযোগ পায় ইতালি। কিন্তু ইংল্যান্ডের পোস্ট লক্ষ্য করে শট নেওয়া ইনসাইনের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এরপর ১৭তম মিনিটে এমারসন অফসাইডের আওতায় পড়লে ভেস্তে যায় ইতালির আক্রমণ। ২৮তম মিনিটে ইতালির ইনসাইনের শট অল্পের জন্য লক্ষ্যে থাকেনি। ৩৫তম মিনিটে সিয়েসা সহজ সুযোগ নষ্ট করলে ব্যবধান কমাতে পারেনি ইতালি। যোগ করা সময়ে ভেরাত্তির আক্রমণ প্রতিহত করেন ইংলিশ গোলরক্ষক পিকফোর্ড। ফলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় ইংল্যান্ড।

দ্বিতীয়ার্ধেও জারি থাকে ইতালিয়ানদের আক্রমণের ধারা। ৫১ মিনিটের মাথায় ইনসাইনের আক্রমণ লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।  ৫৩তম মিনিটে ফের আক্রমণে ওঠে ইতালি। এবারও ইনসাইনের শট টার্গেটে ছিল না। দুই মিনিট পর ইংল্যান্ডের হ্যারি মাগুইর আক্রমণ শানান ইতালির বক্সে। কিন্তু তার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। ৫৭তম মিনিটে ইনসাইন শট নেন ইংল্যান্ডের পোস্ট লক্ষ্য করে। আক্রমণ প্রতিহত হয় পিকফোর্ডের দক্ষতায়।  ৬২তম মিনিটে ফের ইংল্যান্ডের পতন রোধ করেন পিকফোর্ড। একটু পর সিয়েসার আক্রমণও প্রতিহত করেন তিনি।

অবশেষে ৬৭তম মিনিটে প্রতিপক্ষের রক্ষণের জটলা থেকে গোল করেন বোনুচ্চি। ইনসিনিয়ের কর্নারে বল কাছের পোস্টে পড়লে ভেরাত্তি গোলমুখে হেড নেন। শুরুতে সেই হেড ঠেকিয়ে দেন পিকফোর্ড। কিন্তু তাকে পরাস্ত করে বল জালে জড়িয়ে দেন বোনুচ্চি। সেই সঙ্গে ইউরোর ফাইনালে সবথেকে বেশি বয়সে গোল করার রেকর্ডও গড়েন ইতালিয়ান ডিফেন্ডার ৩৪ বছর ৭১ দিন বয়সে ইউরোয় লড়াইয়ে গোল করার রেকর্ড গড়লেন তিনি। ১৯৭৬ সালে পশ্চিম জার্মানির হয়ে হলজেনবেইন ৩০ বছর বয়সে গোল করেছিলেন।

বোনুচ্চির গোলের পর আদতে দুই দলই তেমন ভালো কোনো আক্রমণ শানাতে না পারলে খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের একদম শেষদিকে ইংল্যান্ডের ফিলিপসের আক্রমণ ব্যর্থ হয়। ১০৭ মিনিটের মাথায় বার্নারদেসচির আক্রমণ প্রতিহত করেন পিকফোর্ড। যোগ করা সময়ে ক্রিস্তান্তের শট লক্ষভ্রষ্ট হয়। ফলে এখানেও দুই অর্ধই থাকে গোলশূন্য। ফলে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।